প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিবর্তিত বিশ্বের নিরাপত্তা ব্যবস্থার সাথে তাল মিলিয়ে সর্বোচ্চ পেশাদারী দক্ষতা ও উৎকর্ষতা অর্জনে মনোযোগী হওয়ার জন্য আজ বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রতিটি সদস্যের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি- বাংলাদেশ সেনাবাহিনী অতীতের সাফল্য অব্যাহত রেখে, দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি যে কোন ধরনের দুর্যোগ মোকাবেলায় সর্বদা প্রস্তুত থাকবে।’
প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি সাভার সেনানিবাসে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ৫১ এমএলআরএস রেজিমেন্টে টাইগার মালটিপল লঞ্চ রকেট মিসাইল সিস্টেম (এমএলআরএমএস) সংযোগের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
এই টাইগার এমএলআরএমএস অন্যান্য আর্টিলারি সিস্টেমের তুলনায় কম সময়ে একই সাথে দূরবর্তী একাধিক লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম উল্লেখ করে তিনি আশা প্রকাশ করেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিদ্যমান সক্ষমতা আরো বৃদ্ধি করতে এটি একটি নতুন মাত্রা যোগ করবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি এই আধুনিক পদ্ধতি (এমএলআরএমএস) বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি সেনা সদস্যদের মানসিক শক্তি ও আত্মবিশ্বাসও বৃদ্ধি করবে।’
সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ সাভার সেনানিবাস প্রান্তে যুক্ত হয়ে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন।
এ সময় টাইগার এমএলআরএস সম্পর্কে একটি অডিও-ভিজ্যুয়াল তথ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়।
জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং দেশের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে টাইগার এমএলআরএসকে সেনাবাহিনীতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী সেনা সদস্যদের বলেন, দেশের সশস্ত্র বাহিনীর আধুনিকীকরণের পদক্ষেপের লক্ষ্যে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা দেশের যে কোনো প্রয়োজনের সময় সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে চলেছে, বিশেষ করে এখন তারা চলমান বৈশ্বিক মহামারী কোভিড-১৯ মোকাবেলায় ফ্রন্ট লাইনার হিসেবে কাজ করছে।
শেখ হাসিনা করোনা ভাইরাসের আক্রমণ থেকে নিজেদের দূরে রাখতে স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করার জন্য দেশবাসীর প্রতি তার আহ্বানের পুনরাবৃত্তি করেন।
তিনি বলেন, কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব বিশ্বের অর্থনীতিকে থামিয়ে দিয়েছে। কিন্তু সরকার দেশের অর্থনীতিকে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছে।
বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এখন অর্থনৈতিকভাবে আরও উন্নত বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিকভাবে বিশ্বের অনেক দেশের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ।
তিনি আরও বলেন, আমরা চাই বাংলাদেশ একটি উন্নত দেশ হবে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য থেকে মুক্ত হবে এবং প্রতিটি পরিবার ভালো অবস্থায় বাস করবে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার দীর্ঘদিন রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থাকায় অর্থনৈতিকভাবে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৯৯৮ সালে তার সরকার সেনাবাহিনীর নতুন ব্রিগেড, ইউনিট ও ব্যাটালিয়ান অন্তর্ভুক্ত করার পাশাপাশি ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ (এনডিসি), মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এমআইএসটি) এবং ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অফ পিস সাপোর্ট অপারেশন ট্রেনিং (বিআইপিএসওটি), আর্মড ফোর্সেস মেডিকেল কলেজ (এএফএমসি) প্রতিষ্ঠা করে।
তিনি আরও বলেন, সরকার সেনাবাহিনীতে আর্মাড পারসোনেল ক্যারিয়ারস (এপিসি), এভিসি, যুদ্ধ ট্যাঙ্ক, হেলিকপ্টার এবং অন্যান্য সরঞ্জামও অন্তর্ভুক্ত করেছে।
তিনি বলেন, ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর তারা ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কর্তৃক প্রণীত ‘প্রতিরক্ষা নীতি’র সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ প্রণয়ন করে এবং তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০১৬ সালে বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার (বিপিসি) প্রতিষ্ঠা করেছে।
(বাসস)