দেশের উদ্যোক্তাদের পণ্য সারা বিশ্ব জয় করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন। তিনি বলেন, দেশের এমএসএমই উদ্যোক্তাদের সব ধরনের সহায়তা দিচ্ছে এসএমই ফাউন্ডেশন। শিল্প মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় সারা দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের পণ্য উৎপাদন, বাজার সংযোগ সৃষ্টি, দক্ষতা উন্নয়নে কাজ করছে ফাউন্ডেশন।
রোববার আন্তর্জাতিক এমএসএমই দিবস উপলক্ষে এক ওয়েবিনারের এসব কথা বলেন শিল্পমন্ত্রী।
শোভন কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতকে আরও এগিয়ে নেয়ার লক্ষ্যে ২০১৭ সালে ২৭ জুনকে ‘এমএসএমই দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। সেই হিসেবে এ বছর সারা বিশ্বে পঞ্চমবারের মত দিবসটি পালিত হচ্ছে। আর এসএমই ফাউন্ডেশন প্রথমবারের মত দিবসটি উদযাপন করছে।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯-এর মধ্যেও দেশের প্রত্যন্ত পাড়ায়, গ্রামে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা ছোট ছোট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি করছেন। এখন দরকার তাদের দক্ষতা উন্নয়ন। এসএমই ফাউন্ডেশনের উন্নয়ন কার্যক্রম দেশে দক্ষ উদ্যোক্তা তৈরির প্রয়াস আরও জোরদার করবে।
এসএমই ফাউন্ডেশনের চেয়ারপার্সন অধ্যাপক ড. মো. মাসুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারটি হয়। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আখতার হোসেন, শিল্পসচিব জাকিয়া সুলতানা এবং এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন।
শিল্প প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশের অর্থনীতিতে এসএমই খাতের অবদান ২৫ শতাংশ। এসএমই নীতিমালা ২০১৯ এ ২০২৪ সালের এসএমই খাতের অবদান ৩২ শতাংশ এ উন্নীত করার লক্ষ্য ঠিক করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, দেশের ৭৮ লাখ ১৩ হাজারের অধিক শিল্প প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শতকরা ৯৯ ভাগের বেশি কটেজ, মাইক্রো, ক্ষুদ্র ও মাঝারি বা সিএমএসএমই। অর্থনীতিতে এমএসএমই খাতের অবদান আরও বৃদ্ধি করতে এবং তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি করতে কাজ করছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশের তরুণ ও যুব সমাজ এখন চাকরি খুঁজছে না, নিজেরাই চাকরি দেয়ার ব্যবস্থা করছে।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করছে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্যোক্তা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০১০ সালে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার গড়ে তুলেছিলেন প্রত্যন্ত দ্বীপ জেলা ভোলা থেকে। বর্তমানে ৭০০০ ডিজিটাল সেন্টারে ১৩ হাজার উদ্যোক্তা কাজ করছে। আইসিটি খাতে ২০২৫ সালের মধ্যে ৩০ লক্ষাধিক কর্মসংস্থান তৈরির করার লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
এসএমই ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো. মফিজুর রহমান বলেন, মহামারির প্রেক্ষাপটে এসএমই উদ্যোক্তাদের ক্ষতি কাটিয়ে সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে ইতোমধ্যে এ অর্থবছরে বরাদ্দকৃত ১০০ কোটি টাকা বিতরণ করতে সক্ষম হয়েছে এসএমই ফাউন্ডেশন।
তিনি আরও জানান, আগামী অর্থবছরের জন্য এসএমই খাতের উন্নয়নে এসএমই ফাউন্ডেশনের পাঁচ বছর মেয়াদী (২০২১-২৫) কৌশলগত উন্নয়ন রূপকল্প তৈরি, সরকারের প্রণোদনা প্যাকেজের আওতায় ২০০ কোটি টাকা বিতরণ, ১টি জাতীয় এবং বিভাগ ও জেলা পর্যায়ে ১৬টি আঞ্চলিক এসএমই পণ্য মেলা আয়োজন, নতুন উদ্যোক্তা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা ও চট্টগ্রামে দুটি বিজনেস ইনকিউবেশন সেন্টার প্রতিষ্ঠা, দক্ষতা উন্নয়নে অন্তত পাঁচ হাজার উদ্যোক্তাকে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ প্রদান, অনলাইন মার্কেটিংয়ে উদ্বুদ্ধকরণ ও প্রশিক্ষণ প্রদান, এসএমই উদ্যোক্তাদের পণ্য প্রদর্শন ও বিক্রয়ের জন্য অনলাইন প্রোডাক্ট ডিসপ্লে প্ল্যাটফর্ম, নারী-উদ্যোক্তা ও ক্লাস্টারভিত্তিক উন্নয়নের লক্ষ্য ঠিক করেছে এসএমই ফাউন্ডেশন।