রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের করোনা ইউনিটে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। রবিবার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টার মধ্যে মারা যাওয়াদের মধ্যে সাতজনের করোনা পজেটিভ ছিলো। বাকিরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী জানান, মারা যাওয়াদের মধ্যে রাজশাহীর সাতজন, চাঁপাইনবাগঞ্জের পাঁচজন, নাটোরের একজন ও নওগাঁর একজন। এদের মধ্যে ১১ জন পুরুষ ও তিনজন নারী। এদের মধ্যে চারজন মারা যান আইসিইউতে।
মারা যাওয়া ১৪ জনের মধ্যে ছয়জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। বাকিদের মধ্যে ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে পাঁচজন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছর বয়সের তিনজন পুরুষ। এ নিয়ে চলতি মাসের আজ ২৮ জুন পর্যন্ত এ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে মারা গেলেন ৩১৫ জন।
শামীম ইয়াজদানী জানান, গত ২৪ ঘন্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন আরও ৭৮ জন। এর মধ্যে রাজশাহীর ৫২ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ১০, নাটোরের আট, নওগাঁর চার. পাবনার দুই ও চুয়াডাঙ্গার দুইজন। সুস্থ্য হয়ে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪৭ জন।
হাসপাতালের ৪৮ বেডের আরকটি ওয়ার্ডকে করোনা ইউনিটে যুক্ত করা হয়েছে। এ নিয়ে করোনা ইউনিটে বেডের সংখ্যা হল ৪০৫টি। সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪০৫ বেডের বিপরীতে চিকিৎসাধীন আছেন ৪৪২ জন। যা আগের দিন ছিল ৪৩৪। অতিরিক্ত রোগিদের মেঝে ও বারান্দায় রেখে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
কোভিড ইউনিটে চিকিৎসাধীন রোগিদের মধ্যে রাজশাহীর ৩০৬ জন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের ৪৯ জন, নাটোরের ৩২ জন, নওগাঁর ৩২ জন, পাবনার ১৫ জন, কুষ্টিয়ার তিনজন, চুয়াডাঙ্গার দুইজন, দিনাজপুরের দুজিন ও ঢাকার একজন। আইউসিইউতে ভর্তি আছেন ১৯ জন।
এদিকে রাজশাহীতে কিছুটা কমেছে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ। রবিবার দুইটি ল্যাবে রাজশাহী জেলার ৪৮৫ নমুনা পরীক্ষা করে ১৩৫ জনের শরীরে করোনাভাইরাস পাওয়া গেছে। যা আগের দিনের চেয়ে ১ দশমিক ২৪ শতাংশ কমে করোনা শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৮৪ শতাংশ। যা আগের দিন শনিবার ছিল ২৯ দশমিক ০৮ শতাংশ।
এর আগে শুক্রবার ছিল ৩৪ দশমিক ৫০, বৃহস্পতিবার ছিল ২৯ দশমিক ৭৫, বুধবার ৩৩ দশমিক ৯৫, মঙ্গলবার ৩৩ দশমিক ০৫ এবং সোমবার ছিল ৩৩ দশমিক ৫১ শতাংশ।
শামীম ইয়াজদানী জানান, এ দিন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল পৃথক দুইটি ল্যাবে দুই জেলার ৫৬২ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা পজেটিভ এসেছে ১৪৯ জনের। এখানে রাজশাহী ছাড়াও চাঁপাইনবাগঞ্জের ৭৭ নমুনার মধ্যে পজেটিভ এসেছে ১৪ জনের।
ঈদের পর থেকে রাজশাহীতে করোনার সংক্রমণ বাড়তে থাকে। শনাক্তের হার ৬০ শতাংশের উপরে উঠলে গত ১১ জুন সিটি করপোরেশন এলাকায় এক সপ্তাহের লকডাউন ঘোষণা করে প্রশাসন। এর পর দুই দফা মেয়াদ বাড়িয়ে লকডাউন আগামী ৩০ জুন মধ্য রাত পর্যন্ত করা হয়।