মঙ্গলবার, ০৮ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:৫৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

ই-অরেঞ্জের ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে অনুসন্ধানে নেমেছে সিআইডি

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ১৯ আগস্ট, ২০২১
  • ২০৫ পাঠক পড়েছে

দেশীয় ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে ১১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাতের অভিযোগে মামলা করেছেন ভুক্তভোগীরা। মামলার পর ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানে নেমেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। ই-অরেঞ্জ গ্রাহকের আত্মসাৎ করা প্রায় এক হাজার ১০০ কোটি টাকা কী করেছে তা জানতে ইতোমধ্যে অনুসন্ধান শুরু হয়েছে।

সিআইডির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাতের ঘটনায় গুলশান থানায় যে মামলা করা হয়েছে তার অনুসন্ধান করা হচ্ছে। এ মামলার আসামিসহ বেশ কয়েকজনের তথ্য, ব্যাংক হিসাব দেখা হচ্ছে। ই-অরেঞ্জ বা ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের কোনো অ্যাকাউন্ট থেকে বিদেশে টাকা পাচার হয়েছে কি-না এ বিষয়ে তদন্ত করা হচ্ছে।

সিআইডির সূত্রে জানা গেছে, ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা হলেও সিআইডি তাদের মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়টি অনুসন্ধান করছে। পাশাপাশি তারা কী কারণে, কেন হঠাৎ করে (১ জুলাই) মালিকানা পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিল ওই বিষয়ে অনুসন্ধান করা হচ্ছে। প্রয়োজনে প্রতিষ্ঠানের সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। এছাড়াও অনুসন্ধানে তাদের মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পাওয়া গেলে মামলা করবে সিআইডি। মামলার তদন্তভার সিআইডিতে নেয়ার জন্য আবেদন করা হবে।

সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবির বলেন, সম্প্রতি কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক বেশ কয়েকটি ই-কমার্স সাইটের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। সেগুলো ধরেই আমরা অনুসন্ধান করছি। বর্তমানে আমরা ই-অরেঞ্জ, ধামাকা, সিরাজগঞ্জ শপসহ বেশ কয়েকটি সাইটের লেনদেন নিয়ে অনুসন্ধান করছি। মানি লন্ডারিংয়ের প্রমাণ পেলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

এর আগে, প্রতিশ্রুত সময়ে পণ্য ও টাকা ফেরত না পাওয়ায় মঙ্গলবার ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গুলশান থানায় প্রতারণার মামলা করেন একজন গ্রাহক। মামলায় ই-অরেঞ্জের বিরুদ্ধে গ্রাহকদের মোট ১১০০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। ই-অরেঞ্জের প্রতারণার শিকার মো. তাহেরুল ইসলাম নামে একজন গ্রাহক মামলাটি করেছেন। থানায় উপস্থিত থেকে তার সঙ্গে সাক্ষ্য দিয়েছেন প্রতারণার শিকার আরও ৩৭ জন গ্রাহক।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, গত ২৮ এপ্রিল থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ধরনের পণ্য কেনার জন্য টাকা দেয়া হয়। যা একটি নির্দিষ্ট মেয়াদের পর ই-অরেঞ্জ কোম্পানির ডেলিভারি দেয়ার কথা ছিল। এ শর্তেও বারবার নোটিশের নামে ভুক্তভোগীদের পণ্য ডেলিভারি না করে প্রতারণা করে যাচ্ছে তারা।

ভুক্তভোগীরা ই-অরেঞ্জের অফিসে গিয়ে ডেলিভারি দেয়ার কথা বললে অফিসে কর্মরত কর্মকর্তারা ও মালিকপক্ষ জানান, কিছু দিনের মধ্যে পণ্যগুলো ডেলিভারি দেয়া হবে কিন্তু আজ পর্যন্ত কোনো পণ্য ডেলিভারি না করে এক লাখ ভুক্তভোগীর প্রায় ১১০০ কোটি টাকা প্রতারণামূলকভাবে আত্মসাৎ করা হয়েছে।

মামলায় আরও উল্লেখ করা হয়, করোনাকালীন ভুক্তভোগীদের কষ্টার্জিত অর্থের নিশ্চয়তা না দিয়ে ই-অরেঞ্জ তাদের মালিকানা পরিবর্তনের নামে ধোঁয়াশা সৃষ্টি করছে। নতুন মালিক ও পুরাতন মালিকের কোনো তথ্য ভুক্তভোগীদের সামনে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এছাড়াও আসামিরা সব ধরনের অফিসিয়াল কার্যক্রম বন্ধ করে গা ঢাকা দিয়েছে বলেও মামলায় উল্লেখ করা হয়।

এর আগে, সোমবার রাতে ই-অরেঞ্জ শপের গ্রাহকরা রাজধানীর মিরপুরে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার সামনে বিক্ষোভ করলে মাশরাফি বলেন, ই-অরেঞ্জের সঙ্গে আমার ছয় মাসের চুক্তি ছিল। সেটা শেষ হয়েছে। আমি এখন এটার সঙ্গে নেই। তবুও একজন গ্রাহক বলছে, তাদের পাশে আমাকে থাকতে হবে। আইনগত জায়গায় খুব বেশি কিছু করার নেই। তবুও সাধারণ মানুষের কারণে কথা বলেছি। আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, তাদের পাশে দাঁড়াব।

ই-অরেঞ্জ শপের বিরুদ্ধে কোটি টাকার অর্ডার নিয়ে পণ্য ডেলিভারি না দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। আর সেই টাকা ও পণ্যের দাবিতে মাশরাফি বিন মর্তুজার বাসার সামনে বিক্ষোভ করেন ভুক্তভোগীরা।

এই ক্রিকেটার বলেন, আমানউল্লাহ যিনি এটার সিইও, তার সঙ্গে ভুক্তভোগীদের সামনে লাউড স্পিকারে কথা বলেছি। তিনি বলেছেন, তাদের মালিকানা চেঞ্জ হয়েছে, তাই তারা সময়মত ডেলিভারি দিতে পারেনি। ১৯ তারিখ থেকে তারা পর্যায়ক্রমে ডেলিভারি দেয়া শুরু করবে। তবে আমি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে শেষ পর্যন্ত আছি।

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580