চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে হত্যা মামলার আসামি নিখোঁজের ঘটনায় গঠিত কমিটি বলছে, ওই বন্দি কারাগারের নির্মাণাধীন চারতলা ভবনের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে পালিয়েছেন। কারাগারের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে এই তথ্য পেয়েছে কমিটি।
মঙ্গলবার এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন তদন্ত কমিটির প্রধান ও খুলনা বিভাগের ডিআইজি (প্রিজন) ছগীর মিয়া।
তিনি জানান, কারাগারের সেলে থাকা সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা যায়, ভোর ৫টার আগেই ফরহাদ হোসেন রুবেল ঘুম থেকে উঠে মুখ ধুয়ে নেন। এরপর তাকে ওই সিসি ক্যামেরায় আর দেখা যায়নি। পরে আরেকটি সিসি ক্যামেরা ফুটেজে দেখা যায়, কর্ণফুলী ভবনের নিচতলা থেকে রুবেল বের হচ্ছেন। ভোর সোয়া ৫টায় আরেকটি সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে বন্দি রুবেলকে কারাগারের ফাঁসির মঞ্চের পাশের নির্মাণাধীন চারতলা ভবন থেকে সীমানা দেয়ালের বাইরে লাফ দিতে দেখা গেছে।
ছগীর মিয়া বলেন, রুবেল ছাদ থেকে লাফিয়ে দেয়াল টপকে পালিয়েছেন। প্রাথমিকভাবে তার পালানোর বিষয়টি আমাদের কাছে স্পষ্ট। তবে এ কাজে তাকে কেউ সহযোগিতা করেছেন কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
নিখোঁজ ফরহাদ হোসেন রুবেল নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মীরেরকান্দি গ্রামের শুক্কুর আলী ভাণ্ডারির ছেলে। চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের পঞ্চম তলার ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে থাকতেন তিনি।
কারা সূত্রে জানা গেছে, রুবেল নগরের সদরঘাট থানায় হওয়া একটি হত্যা মামলার আসামি। গত ৮ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ৯ ফেব্রুয়ারি রুবেলকে কারাগারে প্রেরণ করে আদালত। গত শনিবার (৬ মার্চ) ভোর ছয়টায় আসামিদের হাজিরা গণনার সময় রুবেলের অনুপস্থিতি কারা কর্তৃপক্ষের নজরে আসে।
পরে কারা অভ্যন্তরে অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। গতকাল বন্দি রুবেলের খোঁজে কারাগারে তল্লাশি চালায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স টিমের সদস্যরা।
এ ঘটনার তদন্তে খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি প্রিজন মো. ছগির মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তাদের সাত কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। কমিটি গতকাল সোমবার থেকে কাজ শুরু করেছে। এছাড়া চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে জেলা প্রশাসকের নির্দেশে আরেকটি তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এর আগে ঘটনার পরপরই রোববার চট্টগ্রাম কারাগারের জেলার ও ডেপুটি জেলারকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে কারারক্ষী ও সহকারী কারারক্ষীকে।