শুক্রবার, ১১ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

ক্ষমতায় গেলে সব নিবর্তনমূলক আইন বাতিল করবে বিএনপি: ফখরুল

স্টাফ রিপোর্টার:
  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ২২ মে, ২০২২
  • ৯৫৩ পাঠক পড়েছে

আগামীতে ক্ষমতায় গেলে বিএনপি ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টসহ সব ধরনের নিবর্তনমূলক আইন ও অধ্যাদেশ বাতিল করবে বলে জানিয়েছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। রবিবার (২২ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে বিএনপি আয়োজিত গণমাধ্যম সংক্রান্ত এক মতবিনিময় সভায় বিএনপি মহাসচিব এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

‘‘সেজন্য আমাদের সবার দায়িত্ব, সাংবাদিকরা তারা তাদের দায়িত্ব পালন করবেন, রাজনীতিবিদরা তাদের দায়িত্ব তারা পালন করবেন—এরমধ্যে একটা ঐক্য সৃষ্টি করে আমরা যেন দেশে গণতন্ত্রকে পুনরায় ফিরিয়ে আনতে পারি সেই উদ্যোগ গ্রহণ করা উচিত।”

ক্ষমতার পরিবর্তনে আশাবাদ ব্যক্ত করে তিনি বলেন, ‘‘আমরা খুব আশাবাদী। বাংলাদেশের মানুষ কখনও পরাজিত হয়নি। টানেলের পেছনে আলো দেখছি বলেই পুনরায় আমরা উৎসাহিত বা উৎফুল্ল হচ্ছি তাই নয়। আমরা সবসময়ে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য কাজ করেছি, কাজ করে যাচ্ছি। সরকারে যখন ছিলাম তখনও করেছি, সরকারে নেই এখনও গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে যাচ্ছি।”

জাতীয় প্রেস ক্লাবে বিএনপির উদ্যোগে ‘গণতন্ত্র হত্যায় গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণ আইন, প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই মতবিনিময় সভা হয়। এতে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন দলের নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য জহির উদ্দিন স্বপন।

মতবিনিময় সভায় প্রথম আলো’র যুগ্ম সম্পাদক সোহরাব হাসান বলেন, ‘বিএনপির পক্ষ থেকে একটা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হয়েছে। তাতে কিছু অঙ্গীকার করা হয়েছে। তাদের অঙ্গীকারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করতে পারি, আশ্বস্ত হওয়ারও চেষ্টা করতে পারি। কিন্তু আমাদের অতীত আশ্বস্ত হওয়ার মতো পরিস্থিতি নয়, বর্তমান তো নয়ই। স্বাধীনতার পর থেকে কোনও সরকারই সংবাদপত্র বা গণমাধ্যমবান্ধব ছিল না, এখনও নেই। স্বাধীনতার পরে যারাই সরকারে এসেছে- প্রথমে আওয়ামী লীগ সরকার, পরবর্তীকালে বিএনপি, এরপর হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ অথবা জাতীয় পার্টি, পরে আবার বিএনপি, আবার আওয়ামী লীগ, আবার বিএনপি এবং এখন আওয়ামী লীগ।”

বিএনপির আমলে জহুর হোসেন চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে কারাগারে নিয়ে যাওয়া, একুশে টিভি বন্ধ করে দেওয়া, বিভিন্ন মতের পত্রিকায় সরকারি বিজ্ঞাপন কমিয়ে দেওয়াসহ বিভিন্ন উদাহরণও তিনি টানেন।

বাংলাদেশের গণমাধ্যমের বর্তমান অবস্থা তুলে ধরে যুগান্তরের জ্যেষ্ঠ সহকারী সম্পাদক মাহবুব কামাল বলেন, ‘‘বাংলাদেশের প্রেসের অবস্থা খুবই মারাত্মক। এর কারণটা হচ্ছে উইপেন অব ’ল অর্থাৎ আইনকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা। বাংলাদেশে অসংখ্য আইন আছে, যা আমাদের দেশে স্বাধীন ও মুক্ত গণমাধ্যমের পরিপন্থি, প্রত্যেকটি আইন সংবাদপত্র ও গণমাধ্যমের জন্য পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে হুমকিস্বরূপ।”

প্রথম আলোর সোহরাব হোসেনের দেওয়া বক্তব্য খণ্ডন করে বিএফইউজের সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, ‘সোহরাব ভাই সঠিক তথ্য দেননি। সাংবাদিক জহুর হোসেন কারাগারে যাননি। তার বিরুদ্ধে মামলা হওয়ার পর আদালতে আত্মসমপর্ণ করে জামিন নেন। একুশে টিভি বিএনপি সরকার বন্ধ করেনি। এটি টেরিস্টোরিয়াল সম্প্রচারের ইস্যুতে সর্বোচ্চ আদালতের আদেশে বন্ধ হয়েছে।”

একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের আমলে সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড, দৈনিক পত্রিকার সম্পাদকদের বিরুদ্ধে মানহানি মামলা দায়েরসহ সারা দেশে সাংবাদিকদের নির্যাতনের চিত্রও তুলে ধরেন বিএফইউজের এই শীর্ষ নেতা।

মির্জা ফখরুলের সভাপতিত্বে এবং শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানির পরিচালনায় আলোচনা সভায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে ১৭ মাস কারাগারে থাকার পর জামিনে মুক্ত ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী, দিনকালের সম্পাদক ড. রেজোয়ান সিদ্দিকী, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, এমএ আজিজ, নুরুল আমিন রোকন, এলাহী নেওয়াজ খান সাজু, কামাল উদ্দিন সবুজ, বাকের হোসাইন, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, সরদার ফরিদ আহমদ, কাদের গনি চৌধুরী, ইলিয়াস খান, শহীদুল ইসলাম, ইলিয়াস হোসেন, রফিকুল ইসলাম আজাদ, মুরসালিন নোমানী, শফিক আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ, সেলিমা রহমান ও ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকুসহ জ্যেষ্ঠ সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580