গরুর মাংস রপ্তানি করে এরকম দশটি দেশের তালিকায় ৪র্থ অবস্থানে আছে ভারতের নাম।অথচ গরু নাকি তাদের দেবতা!!?।এমনকি তালিকায় প্রথম যে তিনটি দেশ আছে, ব্রাজিল,অস্ট্রেলিয়া এবং আমেরিকা এরা কেউ মুসলিম অধ্যুষিত দেশ নয়। তালিকার প্রথম ৭ টি দেশ মিলিয়ে শুধু ২০২০ সালেই ১ বিলিয়ন পাউন্ডের মতো মাংস রপ্তানী করেছে পুরো বিশ্বে।ভারত এখানে কন্ট্রিবিউট করেছে শতকরা ১২ ভাগের কাছাকাছি (কোথাও কোথাও সাড়ে পাঁচ ভাগের কথাও বলা আছে।আনুমানিক আড়াই বিলিয়ন ডলারের উপরে বিফ রপ্তানী করে ভারত)।
তালিকার প্রথম ১০ টি দেশের মধ্যে কোনটি মুসলিম অধ্যুষিত দেশ নেই।একদম ১৪ নম্বর অবস্থানে আছে পাকিস্তানের নাম।২৪ নম্বরে আছে সৌদি আরবের নাম।২৬ নম্বরে আছে মালয়শিয়া। টহরঃবফ ঝঃধঃবং উবঢ়ধৎঃসবহঃ ঙভ অমৎরপঁষঃঁৎব এর দেয়া তথ্য মতে জাপানে শুধুমাত্র ২০২১ সালের জানুয়ারী মাসেই ১০৫০ টি গরু জবাই করা হয়েছে। তালিকাটি যদি একটু বড় করি তাহলে দেখাতে পারবো ,শুধু শুকরের মাংসের জন্যই একই বছরের জানুয়ারী মাসে প্রায় ১৬ ,৫৭০ টি শূকর জবাই করা হয়েছে। বাদ রইলো ঘোড়া।জাপানের মানুষ সেটাও বাদ দেয় না।কানাডা থেকে ঘোড়া আমদানী করা হয় জাপানীদের জন্য। ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের তথ্য মতে, প্রতি বছর প্রায় ১৯ বিলিয়ন মুরগী, দেড় বিলিয়ন গরু, এক বিলিয়ন ভেড়া এবং সমপরিমান শূকর জবাই করা হয়ে থাকে।বিগত ৫০ বছরে মাংসের চাহিদা বেড়েছে ৩ গুন।এর বেশিরভাগটাই চীন এবং ইউরোপিয়ানদের পেটে যায়।
শুধু আমেরিকাতেই প্রায় ৮০০ টির উপরে স্লট্যারহাউজ আছে যেখানে বিলিয়ন বিলিয়ন পাউন্ড মাংস প্রক্রিয়াজাত হয় (নিউইয়র্ক টাইমস,এপ্রিল ১৮,২০২০) এসব তো গেলো গরুর মাংস নিয়ে বিজনেসের কথা।এইবার একটু দেখে আসি কোন দেশগুলো সবচেয়ে বেশি গরুর মাংস নিচ্ছে। ২০১৮ সালে প্রকাশিত এই রিপোর্টের (ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরাম) তথ্য বলছে আমেরিকার একজন মানুষ বছরে প্রায় ৯৯ কেজি বা ২১৯ পাউন্ড মাংস খায়।আমেরিকানরা তাই সবার উপরে। ২য় অবস্থানে আছে অস্ট্রেলিয়া।জন প্রতি ২০৩ পাউন্ড করে খায়বছর প্রতি। ৩য় অবস্থানে আছে আর্জেন্টিনা।মাথাপিছু ১৯৮ পাউন্ড মাংস খায় প্রতি বছর। ৪র্থ অবস্থানে আছে ইসরায়েল।মাথাপিছু ১৯৫ পাউন্ড মাংস। পরের অবস্থানে যারা আছে তারা কেউ মুসলিম দেশ না।
ব্রাজিল, কানাডা, নিউজিল্যান্ড আর চিলির মানুষ মাংসের উপরেই চলে। এরপরেও যদি আপনার মনে হয় শুধু মুসলিম বলেই একজন মানুষকে কোরবানীর সময় ক্রিটিসাইজ করা উচিত, এরপরেও যদি আপনার মনে হয় কোরবানীর মৌসুম এলেই পশু প্রেম নিয়ে আপনার কথা বলা উচিত তাহলে আমি বলবো আপনি সমালোচক নন।আপনি একজন সুযোগসন্ধানী নিন্দুক বোবা শয়তান।জানেন ,বোঝেন কিন্তু মানতে চান না। কোরবানী ছাড়াও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে কিভাবে প্রান সংহার করা হয় তার একটা বিবরণ দিই। তোরজা উপজাতির মধ্যে একটা অনুষ্ঠান প্রচলিত আছে।তারা মৃত মানুষের সম্মানে অনুষ্ঠানটা করে।সেই অনুষ্ঠানে জীবন্ত মহিষের গলায় দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় (জবাই করে নয়) ছুরি দিয়ে খুচিয়ে খুচিয়ে যন্ত্রনা দেয়া হয়। স্পেনের বুল ফাইট দেখে আপনার কাছে অস্বস্তি লাগে না? বিয়ার গ্রিলসকে দেখে আপনার মধ্যে অনুশোচনাবোধ কাজ করে না? বিফ বার্গার খেতে গিয়ে কোনদিন মনে হয়নি ভেতরের বিফটা কোথা থেকে এলো?