শেখ নাজমুল: বিআইডব্লিউটিসি’র তিন খলিফার অব্যাহত ঘুষ বাণিজ্যে অতিষ্ট সেখানকার কর্মচারীরা। মোঃ আমিনুল ইসলাম এর স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রী বরাবর লিখিত আবেদন সূত্রে জানা যায়- উচ্চমান সহকারী, ওলিউল্লাহ সরকার, মাজেদ, নুরুল আমিন কেরানী, ডিপিএম ফ্লিট, নারায়ণগঞ্জ, ঘুষ-বাণিজ্য ও ত্রাসের রাজত্ব দীর্ঘদিন যাবৎ কায়েম করে চলেছেন এই তিন খলিফা। এছাড়াও ওলিউল্লাহ বিআইডব্লিউটিসি প্রধান কার্যালয়ে ট্রেড ইউনিয়নে ঢাকা ইউনিটের সভাপতি ও মাজেদ-সাংগঠনিক সম্পাদক হওয়াতে তাদের দাপটে সাধারণ কর্মচারীরা অতিষ্ট ও জিম্মি হয়ে পড়েছেন বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এদের অন্যত্রে বদলি হয় না অদৃশ্য কারনে।
মাজেদ, ওলিউল্লাহ সরকার, বিআইডব্লিউটিসি প্রধান কার্যালয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ কর্মরত আছেন এই দুই খলিফা। তাদের যোগসাজসে মাষ্টার ও ড্রাইভারদের নিকট হতে জনপ্রতি ২-৫ লক্ষ টাকার বিনিময়ে বদলী করে থাকেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিআইডব্লিউটিসি’র কর্মরত একাধিক কর্মচারী আজকের সংবাদকে জানান সম্প্রতিক সময়ে পদ্মাসেতুর সাথে একাধিক ফেরীর ধাক্কা লাগার কারন অদক্ষ মাস্টারদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় নিয়োগ দেয়ায়। এছাড়াও ড্রাইভারদের কাছ থেকে আগাম ৩ থেকে ৫ লক্ষ টাকা অগ্রিম নিয়ে তাদেরকে লোভনীয় জায়গায় বদলী করা হয় মাজেদ ও ওলিল্লাহ সরকারের নেতৃত্বে। যা মন্ত্রণালয় কর্তৃক উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করলে অত্র অভিযোগের সত্যতা মিলবে।
সংস্থার নিয়ম মাফিক ২ বৎসর পর্যন্ত কর্মরত থাকতে পারবে অথচ ১ বৎসর ৬ মাস যেতে না যেতেই মাষ্টার ও ড্রাইভারদের অন্যায় ভাবে জাহাজ থেকে নামিয়ে বেইজে রেখে টাকার মাধ্যমে আবারও পদস্থ করা হয়। এদেরকে আইনের আওতায় এনে বাড়ী, গাড়ী, স্থাবর/অস্থাবর ও ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করলে থলে বিড়াল বেরিয়ে আসবে। দূর্নীতিবাজদের কারণে অত্র বিআইডব্লিউটিসি কর্মচারীরা নিপীড়িত। নির্যাতিত ও শারীরিকভাবে নাজেহাল হতে হয় সাধারণ নিরিহ কর্মচারীদের। সংস্থার প্রতিটি ইউনিট ও ঘাটে প্রতি মাসে তাদেরকে জন প্রতি ১০ হাজার টাকা উৎকোচ অঙ্গীকার করলে, কাউকে মাদক আসক্ত বলে বদলী করা হয়, আবার কাউকে বিশৃংখলাকারী হিসেবে বদলী করা হয়। বিআইডব্লিউটিসিতে সবার অজান্তে একটি বিশেষ মহলের মাধ্যমে যে অপতৎপরতা চলছে তা এখনই বন্ধ না করলে বিআইডব্লিউটিসি দেউলিয়া হয়ে যাবে বলে মনে করেন বিজ্ঞ মহল। মাজেদ এর অবৈধ টাকার প্রভাবে রাজধানী রামপুরা/বনশ্রীতে ৬ষ্ঠ তলা একটি বাড়ী নির্মাণ করেছেন।
এছাড়াও তার দেশের বাড়ী কুমিল্লাতে অগাধ সম্পদের মালিক। একই পথে উচ্চমান সহকারী ওলিউল্লাহ মিরপুর-১০ এ মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এছাড়াও তার নিজ জেলা বি.বাড়ীয়া সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। দূর্নীতি দমন কমিশন দুদক খোজ নিলে তাদের এই তিন খলিফার অবৈধ সম্পদের খোজ মিলবে। নুরুল আমিন কেরানী, উচ্চমান সহকারী, ডিপিএম ফ্লিট, নারায়ণগঞ্জ এর ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। প্রায় ৩০ বৎসর যাবৎ কর্মরত আছেন। দূর্নীতির ধরন দেখলে চোখ আকাশে উঠবে, যেমন-চাকরিতে পুরাতন যারা তাদের ক্ষেত্রে চাকুরী না করে বেতন নিলে তাকে দিতে হবে প্রতি মাসে ১,৫০০/- টাকা। নতুন যারা তাদের ক্ষেত্রে চাকুরী না করে বেতন নিতে চাইলে তাকে দিতে হবে প্রতি মাসে ২,০০০/- টাকা। নতুন চাকুরীতে যোগদান করলেই জন প্রতি ২ থেকে ৫ হাজার টাকা দিতে হয় এটা নাকি তার হাদিয়া।
পুলিশ ভেরিফিকেশন জন প্রতি ১০/২০ হাজার টাকা। সেকেট, ড্রাইভার, সুইপার, লসকর, গ্রিজার, বাটলার, পল্টন দেরকে বদলী করে জন প্রতি মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন মহা দূর্নীতিবাজ নুরুল আমিন। এছাড়া জাহাজে পোষ্টিং দিতে নেন জন প্রতি ৩০ হাজার টাকা থেকে ১ লক্ষ টাকা করে। অর্থ সমন্বয়কারীদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরে এ সকল দূর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে আসছে সাধারণ কর্মচারীরা। কিন্তু প্রশাসন কেন নিরব ভুমিকা তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেন না এটা সকলের মুখে মুখে। একাধিকবার মৌখিকভাবে বিআইডব্লিউটিসি’র সাবেক চেয়ারম্যানের কাছে অভিযোগ করে তার কোন প্রতিকার পান নাই বলে আজকের সংবাদকে একাধিক কর্মচারী জানিয়েছে। উক্ত অভিযোগের সত্যতা জানার জন্য মাজেদ উচ্চমান সহকারী ও নুরুল আমিন এর মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে সকল অভিযোগ অসত্য ও মিথ্যা বলে দাবী করেন এবং মাজেদ তার ৬ষ্ঠ তলা বাড়ীর বিষয়ে জানতে চাইলে ঐ ৬ষ্ঠ তলা বিল্ডিং তার পৈত্রিক সম্পত্তি বলে জানান এছাড়া আরেক প্রশ্নের জবাবে জানতে চাওয়া হয় তার অন্য ভাই-বোনেরাও এভাবেই কি বাবার পৈত্রিক আলাদা বিল্ডিং পেয়েছেন জবাবে কোন সদ উত্তর দিতে পারেন নাই মাজেদ।