দেশের মানুষের জন্য কোভিড টিকার ৩১ কোটি ডোজ ব্যবস্থা করে রেখেছেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ভয় ও অপপ্রচার উপেক্ষা করে সবাইকে টিকা নেওয়ার আহ্বানও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এছাড়া করোনা সংক্রমণ বেড়ে চলায় বড় ধরনের জনসমাগম এড়িয়ে চলার তাগিদ দিয়েছেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রায় ৩১ কোটি ডোজ ব্যবস্থা করে রেখেছি। একটি মানুষও যেন টিকা ছাড়া না থাকে, আমরা সেই ব্যবস্থা করেছি। এ ক্ষেত্রে দেশবাসীর কাছে আহ্বান জানাব, কোনো ধরনের অপপ্রচার এবং গায়ে সুই ফোটানোর ভয়কে উপেক্ষা করে টিকা নিতে হবে। সবার প্রতি অনুরোধ থাকবে, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন থেকে বাঁচতে ভয় না পেয়ে টিকাটা নিয়ে নেবেন।
রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আয়োজিত আট বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৬০ শয্যাবিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদ্রোগ ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।বক্তব্য শেষে আট বিভাগীয় শহরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪৬০ শয্যাবিশিষ্ট সমন্বিত ক্যানসার, কিডনি ও হৃদ্রোগ ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উপস্থিত থেকে এসব ইউনিটের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। এর ফলে এখন থেকে দেশের মানুষ সব বিভাগীয় শহরেই বিশেষায়িত এসব সেবা পাবেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনার নতুন ধরন ওমিক্রন নাকি শিশুদের জন্য সব থেকে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। সে জন্য আমরা ১২ বছর বয়স পর্যন্ত শিশুদের টিকা দেওয়ার ব্যবস্থাও নিয়েছি। তা ছাড়া আমি সবাইকে অনুরোধ করব আপনারা ভয় না পেয়ে টিকাটা নিয়ে নিন। টিকাটা নিলে হয়তো কিছুদিন ভোগাবে, কিন্তু জীবনটা রক্ষা পাবে। এরই মধ্যে আমরা প্রায় ১৩ কোটির বেশি ডোজ টিকা প্রদান করেছি। এর মধ্যে ডাবল ডোজও হয়ে গেছে এবং এখন তো আমরা বুস্টার ডোজও দেওয়া শুরু করেছি। আমাদের দেশের মানুষ সুস্থ ও সুরক্ষিত থাকুক সেটাই আমি চাই। এসময় প্রধানমন্ত্রী করোনা সংক্রমণ রোধে মাস্ক পরিধানসহ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা ও জনসমাগম এড়িয়ে বলার ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ মেনে চলতে জনগণকে অনুরোধ জানান।
এসময় অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহেদ মালিক, পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) সাবেক ভিসি ও সংসদ সদস্য অধ্যাপক ডা. প্রাণগোপাল দত্ত, বিএসএমএমইউর ভিসি অধ্যাপক মো. ডা. শারফুদ্দিন আহমেদ, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সিনিয়র সচিব লোকমান হোসেন মিয়া, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এ বি এম খুরশীদ আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, এই আট হাসপাতালে সব মিলিয়ে বেডের সংখ্যা চার হাজার ৬৮০। এগুলো বাস্তবায়িত হলে শুধু চিকিৎসাসেবার মান পরিবর্তন হবে না, মানুষের জীবন রক্ষা হবে এবং বিদেশে চিকিৎসা নেওয়ার প্রবণতা অনেকাংশে কমবে। এতে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হবে।