রবিবার, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ১০:২০ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

বকশিশের জন্য অক্সিজেন মাস্ক খুলে নেওয়া সেই হাসপাতাল কর্মচারি গ্রেফতার

বগুড়া ব্যুরো
  • প্রকাশিত সময় : বৃহস্পতিবার, ১১ নভেম্বর, ২০২১
  • ১৫৩৮ পাঠক পড়েছে

পঞ্চাশ টাকা বকশিস কম দেওয়ায় অক্সিজেন মাস্ক খুলে স্কুল ছাত্রকে হত্যায় জড়িত আসাদুজ্জামান মীর ধলু (৪০) নামের সেই কর্মচারীকে ঢাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছ। বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের খন্ডকালীন এ কর্মচারিকে বৃহস্পতিবার ভোরে ঢাকার আবদুল্লাহপুর থেকে গ্রেফতার করে র্যা ব-১২ বগুড়া স্পেশাল কোম্পানীর একটি দল। কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার সোহরাব হোসেন এসব তথ্য জানান। তিনি বলেন, ঢাকায় সংবাদ সম্মেলনে ঘটনার ব্যাপারে বিস্তারিত বলা হবে।

পুলিশ ও নিহতের স্বজনরা জানান, মৃত বিকাশ চন্দ্র কর্মকার গাইবান্ধা উপজেলার সাঘাটা উপজেলার শিয়ালকুন্ডি গ্রামের বিশু চন্দ্র কর্মচারের ছেলে। সে স্থানীয় একটি স্কুলে ৮ম শ্রেণিতে পড়তো। সংসারে অভাবের কারণে বিকাশ লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করতো। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে সে বাইসাইকেলে বাড়ি ফিরছিল। রাস্তায় একটি মোটরসাইকেলের সঙ্গে ধাক্কা লাগলে মাথায় গুরুতর আঘাত পায়। পরে তাকে প্রথমে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর রাত ১০টার দিকে বগুড়া শজিমেক হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।

বিকাশের কাকা শচীন চন্দ্র কর্মকার জানান, হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কাজ শেষে রাত সাড়ে ১০টার দিকে অক্সিজেনসহ তার ভাতিজাকে তৃতীয় তলায় সার্জারী বিভাগে নেওয়া হয়। ট্রলি বহণকারী হাসপাতালের কর্মচারি আসাদুজ্জামান মীর ধলু বেডে পৌঁছে দেওয়ার পর ২০০ টাকা বকশিস দাবি করে। বিকাশের বাবা কাছে থাকা ১৫০ টাকা দিলে দুলু আরো ৫০ টাকার জন্য বাকবিতন্ডা শুরু করেন।কিন্তু টাকা দিতে না পারায় ক্ষুব্ধ ধলু অক্সিজেন মাস্ক খুলে ফেলে।

পরে তাকে মাস্ক লাগাতে অনুরোধ করা হলে সে অস্বীকৃতি জানায়।এতে বাধ্য হয়ে নিজেরা মাস্ক লাগালোর চেষ্টা করেন। এ সময় নাক-মুখ দিয়ে ফেনা বের হয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে বিকাশ মারা যায়। চিকিৎসক এসে তার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। এ সময় রোগির লোকজন পাষান্ড ধলু ওপর চড়াও হলে সে কর্তব্যরত আনসারদের সহযোগিতায় পালিয়ে যায়। ছিলিমপুর মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির এসআই শামিম হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, রোগি মারা যাওয়ার পর উত্তেজনা দেখা দেয়। তখন তারা তৃতীয়তলায় গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন। কিন্তু আগেই অভিযুক্ত কর্মচারি পালিয়ে যায়।

ধলু গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ উপজেলার কুমিরাডাঙ্গা গ্রামের জইনুদ্দিন মীরের ছেলে। সে হাসপাতালের খন্ডকালীন কর্মচারি। বুধবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে বিকাশের মরদেহ স্বজনরা নিয়ে গেছেন। দরিদ্র হওয়ায় তারা মামলার ব্যাপারে আগ্রহী নন বলেও জানান তিনি।শজিমেকের উপ-পরিচালক ডা. আবদুল ওয়াদুদ জানান, জরুরি বিভাগের চিকিৎসক মনির আলী আকন্দের নেতৃত্বে চার সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তারা ৫ কর্মদিবসের মধ্যে রিপোর্ট দিবে। অভিযোগের সততা পেলে খন্ডকালীন কর্মচারি ধলুর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580