বঙ্গবন্ধু একটি জাগ্রত ইতিহাস, বর্ণিল ঐশ্বর্য বলে উল্লেখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, আগস্ট মাসটি বাঙালি জাতি তথা বাংলাদেশের জন্য শোকের মাস। হৃদয়ের রক্তক্ষরণের মাস; অনুভূতি, উপলব্ধি ও মননশীলতার পরতে পরতে অসহ্য ও তীক্ষ্ণ যন্ত্রণা বয়ে যাওয়ার মাস।
রোববার অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ কর্তৃক আয়োজিত স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদতবার্ষিকী উপলক্ষে এক ভার্চ্যুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট জাতীয় শোকের দিন। বাংলার আকাশ-বাতাস আর প্রকৃতিও অশ্রুসিক্ত হওয়ার দিন। পঁচাত্তরের এই দিনে আগস্ট আর শ্রাবণ মিলেমিশে একাকার হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর রক্ত আর আকাশের মর্মছেঁড়া অশ্রুর প্লাবনে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু একটি নাম নয়, বঙ্গবন্ধু হলেন একটি জাগ্রত ইতিহাস। একটি স্বাধীন জাতিসত্তার অপরিমেয় অহংকার, বর্ণিল ঐশ্বর্য।
অর্থমন্ত্রী আরো বলেন, ইতিহাসের জঘন্যতম সেই কালরাতে ঘাতকরা শুধু বঙ্গবন্ধুকেই হত্যা করেনি, তাদের হাতে একে একে প্রাণ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব, বঙ্গবন্ধুর সন্তান শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু শেখ রাসেলসহ পুত্রবধূ সুলতানা কামাল ও রোজি জামাল। পৃথিবীর এই ঘৃণ্যতম হত্যাকাণ্ড থেকে বাঁচতে পারেননি বঙ্গবন্ধুর সহোদর শেখ নাসের, ভগ্নীপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগ্নে যুবনেতা ও সাংবাদিক শেখ ফজলুল হক মনি, তার অন্তঃসত্ত্বা সহধর্মিণী আরজু মনি ও কর্নেল জামিলসহ পরিবারের ১৬ জন সদস্য ও আত্মীয়-স্বজন। সেনাবাহিনীর কিছুসংখ্যক বিপথগামী সদস্য সপরিবারে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর বাংলাদেশসহ গোটা বিশ্বে নেমে আসে তীব্র শোকের ছায়া, সারা বিশ্ব হতবাক হয়ে যায় এবং ছড়িয়ে পড়ে ঘৃণার বিষবাষ্প।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু টুঙ্গিপাড়ার হিজল তমালের সুশীতল ছায়ায় চিরনিদ্রায় শায়িত থাকলেও বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের কাঠামোর সব স্তরে, জাতীয় পতাকায়, জাতীয় সংগীতে, শস্য ক্ষেতে দোল খাওয়া ফসলে, নদীর কলতানে, পাখির কুজনে তিনি আছেন এবং থাকবেন। বঙ্গবন্ধু আছেন, তিনি থাকবেন বাঙালির মননে, চেতনায়, ভালোবাসায় অমর অক্ষয় এবং অব্যয় হয়ে।
অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ১৫ আগস্ট শোকের দিন, জাতির জন্য একটি কলঙ্কিত দিন একটি কালো অধ্যায়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজীবুর রহমান যিনি আমাদের স্বাধীনতা এনে দিয়েছিলেন, সোনার বাংলার স্বপ্ন দেখেছিলেন, আমাদের অর্থনৈতিক মুক্তি এনে দিতে চেয়েছিলেন। এই দিনে ঘাতকেরা হত্যা করে সেই সর্বকালের সর্ব শ্রেষ্ঠ বাঙালিকে। ১০ জানুয়ারি ১৯৭২ পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে দেশে প্রত্যাবর্তন করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শূন্য থেকে শুরু করেন দেশ বিনির্মাণের কঠিনতম কাজ। ১৯৭২ সালেই তিনি প্রণয়ন করেন বাংলাদেশের প্রথম পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনা। তিনি বাংলাদেশের আর্থসামজিক উন্নয়নের সামগ্রিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করেন যার ভিত্তি মূলে আমাদের আজকের বাস্তবতা রূপ লাভ করেছে।