জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের হিসাবরক্ষক মাহাবুবুর রহমানের বদলীতে জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাঝে স্বত্বির নি:শ^াস, এছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা আনন্দ উল্লাস ও মিষ্টি বিতরণ করেছেন। বদলী আদেশে দেখা যায়, ০৩ (তিন) কার্য দিবসের মধ্যে ছাড়পত্রৃ গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ৪র্থ কর্ম দিবসের দিন থেকে সরাসরি ষ্টান্ড রিলিজ পাইয়াছেন বলে গণ্য হবে।
গত ০৫/০৮/২০২১ ইং তারিখ জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের পরিচালক ডাঃ রাশেদা সুলতানা স্বাক্ষরিত যা স্বারক নং ৫৫২, অপরাহেৃ জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট ভয়ঙ্কর এই দূর্নীতিবাজকে ছাড়পত্র প্রদান করেন। এছাড়া গত ০৩/০৮/২০২১ ইং তারিখ ডা: শেখ মুহাম্মদ হাসান ইমাম পরিচালক প্রশাসন, স্বারক নং ৩০৮৭/১ (১১) স্বাক্ষরিত প্রত্রের মাধ্যমে স্বাস্থ্যৃ অধিদপ্তর থেকে বদলী আদেশ জারী করেন। এবং ০৫/০৮/২০২১ ইং তারিখ জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউট থেকে ছাড়পত্র প্রদান করা হলেও তিনি কর্তৃপক্ষের এই বদলির আদেশকে বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখিয়ে তার বদলীকৃত কর্মস্থলে যোগদান না করে দূর্ণীতিতে রেকর্ড সৃষ্টিকারী হিসাবরক্ষক মাহাবুব স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতাদের কাছে বদলী ঠেকানোর জন্য ব্যাপক তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন বলে একটি বিশ^স্ত সূত্রে জানা গেছে।
এই কর্মকর্তার বদলি হলেও এখনও ধরাছোয়ার বাহিরে রয়ে গেছেন তার সিন্ডকেটের এর কিছু সদস্যা তারও দীর্ঘদিন একই জাগা কর্মরত আছেন তাদের কে ও বদলির আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন সেখানকার কর্মকর্তা কর্মচারীগণ। দেশের একমাত্র স্যালাইন উৎপাদনকারী সরকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্যা ইনষ্টিটিউট (আইপিএইচ) দীর্ঘদিন ধরে দূর্নীতিবাজ মাহাবুব সিন্ডিকেট রাম রাজত্ব চালিয়ে আসছেন। এই দূর্নীতিবাজ চক্র বছরের পর বছর ধরে অবৈধভাবে ক্যাশ পারসেজ, কোটেশন, টেন্ডার বাণিজ্য, আউট সোসিং নিয়োগ, ভূয়া বিল-ভাউচার সহ নানান অপকর্মের মাধ্যমে অবৈধ্য ভাবে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে এখন কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন।
এই কর্মকর্তার সিন্ডিকেটের মূল হোতা মাহাবুব শুধু তাই নয়, এক সময় এই প্রতিষ্ঠান থেকে আইভি ফ্লুইড ৩% সোডিয়াম ক্লোরাইড স্যালাইন সহ ১৭ প্রকার বিভিন্ন ধরনের স্যালাইন উৎপাদন করে দেশের ৪০% চাহিদা পূরণ করতেন, কিন্তু গত ৩ বৎসর যাবৎ অতি সুকৌশলে সকল প্রকার স্যালাইন এবং ব্লাড ব্যাগ উৎপাদন বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। এছাড়া জীবন রক্ষকারী দেশের একমাত্র সরকারী প্রতিষ্ঠান জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটে দক্ষ জনবল, আধুনিক মেশিনারীজ বিদ্যমান থাকা স্বত্ত্বেও মাহাবুব সিন্ডিকেট চক্রান্তমূলক ভাবে আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন। এজন্য শুধু শাস্তিমূলকভাবে বদলী কিংবা লঘুদন্ড প্রদানই যথেষ্ট নয় তাকে চাকুরিচ্যুত, জেল-জরিমানা সহ আরো কঠোর শাস্তি হওয়া উচিত ছিল বলে জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের একাধিক কর্মকর্তা, কর্মচারী আজকের সংবাদ কে জানান।
আইপিএইচ এর ভাইরোলজিষ্ট শাখায়, নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মকর্তা আজকের সংবাদ কে জানান যে, মাহাবুব ভাইলোজিষ্ট শাখার পুরাতন পিসিআর মেশিনসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতি রং করে তার নিজস্ব মনোনিত ঠিকাদারের মাধ্যমে সরবরাহ করেছেন যা বর্তমানে অকার্যকর অবস্থায় পড়েছেন। মাহাবুব এর বিরুদ্ধে বিগত সময় একাধিক পত্রিকার রিপোর্ট ও লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ডিজি’র নির্দেশে তদন্তের নির্দেশ প্রদান করলে ডাঃ হারুন অর-রশিদ, উপ-পরিচালক অর্থ ও সহকারী পরিচালক (শৃঙ্খলা) ডাঃ হিলিশ রঞ্জন সরকারকে দিয়ে একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে তাঁরা সব ধরনের ভয়-ভীতি উপেক্ষা করে দূর্নীতিবাজ মাহাবুব এর বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগসমূহ প্রমাণিত হলে, মাহাবুবের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
এছাড়া তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগের মধ্যে সাড়ে ছয় কোটি টাকা আত্মসাৎ, ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের জায়গা দখল করে ঘরবাড়ী নির্মাণ করে নিজে বসবাস করেন এবং প্রতি মাসে লক্ষ লক্ষ টাকা ভাড়া তুলেন। সেই প্রেক্ষিতে গত ০৪/০৮/২০২১ ইং তারিখে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের প্রশাসনিক আদেশে দেখা যায় সরকারী কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা ২০১৮ এর ৩(খ) এবং ৩(ঘ) বিধি অনুযায়ী অসদাচরণ ও দূর্নীতির অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় অভিযোগের গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিক বিষয়াদি বিবেচনা করে তার বিরুদ্ধে দন্ডাদেশ প্রদান করেন। ক) দূর্নীতিবাজ মাহাবুবের ২টি বার্ষিক বর্ধিত বেতন স্থগিত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে উক্ত বার্ষিক বর্ধিত বেতনের বকেয়া দাবী করিতে পারিবে না। খ) ‘‘ক” বর্ণিত আদেশটি তাঁর চাকুরী বহিতে ‘‘লাল কালি” দিয়ে লিপিবদ্ধ করার আদেশ প্রদান করেছেন তদন্ত কর্মকর্তাগণ। এই প্রতিবেদক পটুয়াখালী জেলার মির্জাগঞ্জ ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করলে তাঁরা জানিয়েছেন, বদলীকৃত কর্মচারী অদ্যবধি যোগদান করেন নাই। জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছে যিনি বোবা ডাকাত হিসেবে পরিচিত মাহবুবুর রহমান ১৯৯২ সাল থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত অর্থাৎ ২৬ বৎসর যাবৎ একই প্রতিষ্ঠানে একই পদে কর্মরত থেকে দূর্নীতির স্বর্গরাজ্যেৃ পরিণত করেছেন। তার লাগামহীন দূর্নীতির কারণে স্বাস্থ্য সেক্টরের সরকারীভাবে একমাত্র উৎপাদিত আইভি ফ্লুইড/স্যালাইন তৈরীর একমাত্র প্রতিষ্ঠানটি আজ ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে গেছেন মাহাবুব। যখন যে পরিচালক এই প্রতিষ্ঠানে যোগদান করে তাদের যোগ-সাজসে তিনি কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন।
গত ২০১৭-২০১৮ অর্থ বৎসর হইতে ২০১৯-২০২০ ইং পর্যন্ত অর্থ বৎসর এই বিগত তিনটি অর্থ বৎসরে জনস্বাস্থ্য ইনষ্টিটিউটে এবং খাবার স্যালাইন উৎপাদন প্রকল্পের নামে বরাদ্দকৃত প্রায় দুইশত কোটি টাকার মালামাল ক্রয়ের ক্ষেত্রে কোন টেন্ডার আহ্বান না করে শুধু মাত্র ক্যাশ পারসেজ, কোটেশন এবং তথাকথিত ডিপিএম পদ্ধতিতে এই বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রকৃত মূল্যের চেয়ে কয়েক শতগুন বৃদ্ধি করে ভূয়া বিল-ভাউচারের মাধ্যমে ঠিকাদারদের সাথে যোগ-সাজসে আত্মসাৎ করেছেন মাহাবুব। যা দূর্নীতি দমন কমিশন ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় উচ্চ পর্যায়ে তদন্ত করলে ঐ সকল আর্থিক অনিয়ম দূর্নীতির প্রমাণ মিলবে। উক্ত অভিযোগের সতত্যা জানার জন্য মাহাবুব এর মোবাইল ফোনে ফোন দিলে ফোন বন্ধ থাকাতে তার কোন মতামত পাওয়া যায়নি।