ফেনীতে ব্যবসায়ী স্বামীকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় স্ত্রী শাহনাজ নাদিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ফেনী জেলা ও দায়রা জজ ড. জেবুন্নেছার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে কায়সার হত্যার একমাত্র আসামি স্ত্রী শাহনাজ নাদিয়াকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
নিহত কায়সারের পিতা আবুল খায়ের বলেন, আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। এ মামলায় তার ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। আমরা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে উচ্চ আদালতে যাবো।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী হাফেজ আহাম্মদ বলেন, আসামি শাহনাজ নাদিয়াই কায়সারের হত্যাকারী তা সকল সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে। ফলে আদালত আসামির বয়স বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন।
আসামির আইনজীবী আহসান কবির বেঙ্গল জানান, ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি নির্ভর করে রায় ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা যথাযথ রায় পাইনি। অচিরেই উচ্চ আদালতে আপিল করা হবে। এর আগে ২০ সেপ্টেম্বর যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে বৃহস্পতিবার এ রায়ের দিন ধার্য করেন। ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়। এ মামলার বাদী প্রফেসর আবুল খায়ের, ম্যাজিস্ট্রেট ও তদন্তকারী কর্মকর্তাসহ ১৭ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়। কায়সার হত্যা মামলায় ২৯ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর রামপুর ভূইয়া বাড়ির নজির সওদাগর বাড়ির প্রফেসর আবুল খায়েরের ছেলে কায়সার মাহমুদের সাথে আনন্দপুর ইউনিয়নের বন্দুয়া দৌলতপুর গ্রামের আবুল কাশেমের মেয়ে শাহনাজ নাদিয়ার সাথে বিয়ে হয়।
বিয়ের পরও নাদিয়া পূর্বের প্রেমিকের মোহে অন্ধ ছিল। ফলে ঐ প্রেমিকের যোগসাজশে ২০১৪ সালের ১১ এপ্রিল সন্ধ্যায় পূর্বপরিকল্পিতভাবে ডাক্তার দেখানোর কথা বলে কায়সারকে নিয়ে বাসা থেকে বের হন। একপর্যায়ে তাকে ছুরিকাঘাত করে ফালাহিয়া মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানের পাশে ফেলে রাত সাড়ে ৯টার দিকে বাবার বাসায় চলে যান নাদিয়া।
স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ফেনী জেনারেল হাসপাতালে পাঠালে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই কায়সারের বাবা প্রফেসর আবুল খায়ের বাদী হয়ে শাহনাজ নাদিয়া ও তার প্রেমিক মো. হারুনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই মো. আলমগীর হোসেন বাসা থেকে শাহনাজ নাদিয়াকে গ্রেপ্তার করেন। ১৩ এপ্রিল বিকেলে কায়সারকে একাই হত্যা করেছেন বলে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন তিনি।
করোনা পরিস্থিতির কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় ১৫ সেপ্টেম্বর এ মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় ঘোষণা করা হয়।