বুধবার, ০৯ অক্টোবর ২০২৪, ০৮:২৭ অপরাহ্ন
শিরোনাম :

রিসোর্টে হামলা : মামুনুলসহ ৮৩ জনের নামে তিন মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক :
  • প্রকাশিত সময় : বুধবার, ৭ এপ্রিল, ২০২১
  • ২৭৬ পাঠক পড়েছে

পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাংচুরের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ৮৩ জনের নাম উল্লেখ করে মামলা হয়েছে। এছাড়া মামলায় ৫০০ থেকে ৬০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়েছে।
বুধবার বিকেলে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল মঙ্গলবার রাতে তিনটি মামলা হয়। পুলিশ বাদী হয়ে দুটি মামলা করেছে। আর সাংবাদিক বাদী হয়ে একটি মামলা করেছে।’
সোনারগাঁ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) ইয়াউর প্রথম মামলাটি করেন।
এ মামলায় সরকারি কাজে বাধা, পুলিশের ওপর হামলা ও রিসোর্টে ভাঙচুরের অভিযোগ এনে ৪১ জনের নাম উল্লেখ করা হয় এবং অজ্ঞাত ২৫০-৩০০ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে।
এ মামলায় সোনারগাঁ পৌরসভা জাতীয় পার্টির সভাপতি এম. এ জামান, সাধারণ সম্পাদক সফিকুল ইসলাম, মোগরাপাড়া চৌরাস্তা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মহিউদ্দিন খান, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মসজিদের খতিব ইকবাল হোসেনসহ উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের হেফাজত ও বিএনপির নেতাকর্মীদের আসামি করা হয়।
এছাড়া আরেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) আরিফ হাওলাদার বাদী হয়ে যানবাহনে অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগ এনে দ্বিতীয় মামলাটি করেন।
এ মামলায় ৪২ জনের নাম উল্লেখ ও ২৫০/৩০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়। এ মামলায় হেফাজতে ইসলাম, জাতীয় পার্টি ও বিএনপি নেতাকর্মীদের নাম উল্লেখ রয়েছে।
অপর মামলাটি করেন বেসরকারি টেলিভিশন এসএ টেলিভিশনের নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি হাবিবুর রহমান। এ মামলায় ১৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয় ও ৭০-৮০ জন অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করা হয়।
এর আগে সোনারগাঁয়ের ওই রিসোর্ট থেকে তাকে ছাড়িয়ে ৩ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্থানীয় একটি মসজিদে নিয়ে যান হেফাজত নেতাকর্মীরা। এর আগে বিকেলে রয়েল রিসোর্টে মামুনুল হককে স্থানীয় কয়েকজন অবরুদ্ধ করে রাখেন।
সেদিন এ ঘটনায় ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে বলতে শোনা যায়, মামুনুল এক নারীসহ আটক হয়েছেন। যদিও ওই নারীকে নিজের স্ত্রী বলে দাবি করেছেন তিনি।
এ সময় পুলিশ ও স্থানীয় প্রশাসনের লোকজনও সেখানে উপস্থিত হন। এ ঘটনা ফেসবুকে লাইভ করেন কয়েকজন ব্যক্তি। ওই লাইভ দেখে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর স্থানীয় লোকজন ও মাদরাসার শত শত ছাত্র ওই রিসোর্ট গিয়ে মামুনুল হককে নিয়ে আসেন। বের হয়ে এসে মামুনুল হক জনতার উদ্দেশে বক্তব্য দেন।
তিনি বলেন, ‘কিছু বাইরের লোক খারাপ আচরণ করেছে। আমি আমার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে এখানে ঘুরতে এসেছিলাম। আপনারা শান্ত থাকুন।’
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, স্থানীয় কিছু লোক মাওলানা মামুনুল হককে রিসোর্টের ৫০১ নম্বর কক্ষে অবরুদ্ধ করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
এ সময় মামুনুল হক তাদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, তিনি তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে নিয়ে রিসোর্টে আসেন। স্ত্রীর নাম আমেনা তৈয়ব। শরিয়ত অনুযায়ী তিনি দুই বছর আগে আমেনাকে বিয়ে করেন। এ বিষয়ে তার কাছে প্রমাণও রয়েছে।
এর আগে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোহাম্মদ জায়েদুল আলম গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, হেফাজত নেতা মামুনুল হককে আটক কিংবা গ্রেফতার কোনোটিই করা হয়নি। স্থানীয়রা তাকে ঘিরে ফেলায় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক করে আনতে সক্ষম হয়। তবে পুলিশ তাকে নিরাপত্তা দিয়ে রেখেছে।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মামুনুল হককে ছিনিয়ে নেয়ার সময় হেফাজতের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা লাঠিসোটা হাতে রিসোর্টে ভাংচুর চালান। এরপর তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন।
এসময় হেফাজত কর্মীরা রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে সড়কে অবস্থান নেন এবং বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাংচুর করেন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি শান্ত করতে টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
রয়েল রিসোর্টে হেফাজতের কর্মীদের ভাংচুরের সময় ভেতরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন, জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) টিএম মোশাররফ হোসেন, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আতিকুল ইসলাম, সহকারী কমিশনার (ভূমি) গোলাম মোস্তফা মুন্নাসহ সরকারি পর্যায়ের বিভিন্ন কর্মকর্তা।
এসময় হেফাজতের উত্তেজিত কর্মী-সমর্থকরা রিসোর্টের বাইরে অবস্থান নেন।

 

 

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580