স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ২৬ মার্চ দুদিনের সফরে বাংলাদেশে আসছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। করোনা মহামারি শুরুর পর এটি তার প্রথম বিদেশ সফর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আমন্ত্রণে বাংলাদেশ সফরে নরেন্দ্র মোদি সম্মানিত অতিথি হিসেবে জাতীয় কর্মসূচিতে অংশ নেবেন। মোদি ২৭ মার্চ দিল্লি ফিরে যাবেন।

এই সফরে মোদি তিনটি মৌ চুক্তিতে স্বাক্ষর করতে পারেন। এর মধ্যে একটি হলো বিপর্যয় প্রতিরোধে ভারত-বাংলাদেশের যৌথ উদ্যোগ সম্পর্কিত। মোদির সফরের সময়ই ভারতের একটি বড় কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বাংলাদেশের চুক্তির কথাও ঘোষণা হতে পারে।

বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বাংলাদেশকে ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্স উপহার দেবে ভারত সরকার। ২৬ মার্চ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় এগুলো হস্তান্তর করা হবে। মঙ্গলবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এ তথ্য জানান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামী। বুধবার (১৭ মার্চ) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ১০৯টি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে চারটি পাবে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্বাচনী এলাকা সিলেট। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন মোদির এই সফরকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়েছেন।

নরেন্দ্র মোদি বাংলাদেশে জাতীয় প্যারেড গ্রাউন্ডে স্বাধীনতা উৎসবে অংশ নেবেন, টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পৈতৃক ভিটা পরিদর্শন করবেন, গোপালগঞ্জ ও সাতক্ষীরায় দুটি মন্দির পরিদর্শন করবেন। এছাড়াও পশ্চিমবঙ্গের ভোটের কথা মাথায় রেখে যাবেন মতুয়াদের মন্দিরে। মোদির সঙ্গে থাকবেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী বিদ্যাদেবী ভান্ডারী, শ্রীলংকার প্রধানমন্ত্রী মাহিন্দ্রা রাজাপক্ষে ও মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম আল সাদেক।

বুধবার ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের তরফে বলা হয়েছে, মোদির সফর প্রতিবেশি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গুরুত্বকে সবার উর্ধ্বে তুলে ধরে। এর আগে ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সফরে এসেছিলেন মোদি। এ সফর বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৫০ বছর পূর্তির বিষয়টিও উদযাপন করবেন দুই দেশের সরকার প্রধান।

এর আগে বুধবার টুইটারে বাংলা ভাষায় দেওয়া এক বার্তায় মোদি বলেন, মানবাধিকার ও স্বাধীনতার রক্ষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মবার্ষিকীতে তার প্রতি আমার আন্তরিক শ্রদ্ধা। সব ভারতীয় নাগরিকের কাছেও তিনি একজন বীর হিসেবে গণ্য হন। এই মাসের শেষের দিকে ঐতিহাসিক মুজিববর্ষ উদ্যাপন উপলক্ষে বাংলাদেশ সফর করতে পারা আমার জন্য সম্মানের বিষয়। আলাদাভাবে ইংরেজিতেও একই বার্তা টুইট করেন মোদি।

পৃথক টুইটার বার্তায় ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্করও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান। বুধবার টুইটারে দেওয়া বার্তায় তিনি লিখেন, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বিশ্বব্যাপী কোটি কোটি মানুষকে অব্যাহতভাবে অনুপ্রাণিত করবে। তিনি বলেন, এই ঐতিহাসিক মুজিববর্ষে বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে তার এই জন্মশতবার্ষিকী পালন করতে পেরে ভারত গর্বিত।