শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ১১:৩৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :

স্বাস্থ্য, কৃষি ও এসএমই খাতকে সহায়তায় বিশেষ উদ্যোগ দরকার: সিপিডি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ৩১ মে, ২০২১
  • ২১১ পাঠক পড়েছে

আগামী অর্থবছরের বাজেটে স্বাস্থ্য, সামাজিক নিরাপত্তা, কৃষি ও এসএমই খাতে সাহায্য করার বিশেষ উদ্যোগ দরকার বলে মনে করে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়লগ (সিপিডি)। অর্থনীতির প্রবৃদ্ধিতে গুরুত্ব না দিয়ে জীবন ও জীবিকার উন্নয়নে গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির গবেষকরা।

সোমবার দেশের সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সিপিডির পক্ষ থেকে এসব কথা বলা হয়। সংবাদ সম্মেলনে সিপিডির বিশ্লেষণ প্রতিবেদন তুলে ধরেন সংস্থাটির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, প্রতি বছরের মত চলতি অর্থবছরেও রাজস্ব ঘাটতি থাকবে। অন্যদিকে রাজস্ব সংগ্রহে যতটা ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, সেই তুলনায় সরকারের ব্যয় হচ্ছে না। এদিকে শিল্প খাতের উৎপাদন কমেছে। মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। বেসরকারি বিনিয়োগও কম। সেই তুলনায় রপ্তানিতে প্রবৃদ্ধি হয়েছে, কিন্তু করোনার আগের অবস্থায় যায়নি। তবে নিট রপ্তানি বেড়েছে। করোনার কারণে মানুষ চাকরি হারিয়েছে। যারা চাকরি ফিরে পেয়েছে আয় আগের জায়গায় যায়নি। ভোগ কমে গেছে। দারিদ্র বেড়েছে। বৈষম্য বেড়েছে। মানুষ কাজ খুঁজতে গিয়ে যোগ্যতার তুলনায় কম গুরুত্বপূর্ণ কাজে যাচ্ছে। এ অবস্থায় বৈষম্য রোধ ও সমবণ্টনে মনোযোগ দিতে হবে। সাধারণ মানুষের আয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্ব দিতে হবে।

তৌফিকুল ইসলাম খান আরও বলেন, বর্তমান কর কাঠামোতে নতুন কর আরোপ করা বা উচ্চ কর আরোপের সুযোগ নেই। যাওয়াও ঠিক হবে না। তবে রাজস্ব আহরণ বাড়াতে হবে। এজন্য কর ফাঁকি রোধ করতে হবে। অর্থপাচার রোধ করতে হবে। একইসঙ্গে শিক্ষা, কর্মসংস্থানমুখী কার্যক্রমে গুরুত্ব দিতে হবে। এডিপি বাস্তবায়নে আরও মনোযোগী হওয়া দরকার, বিশেষ করে চলমান গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন গুরুত্বপূর্ণ। যারা বা যেসব প্রতিষ্ঠান বাজেট বাস্তবায়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত তাদের প্রস্তুতি দরকার। সুশাসন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না গেলে অর্থ ব্যয় করেও প্রকৃত লক্ষ্য অর্জন হবে না।

তিনি চাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনির বাজারে স্থিতিশীলতা আনার ওপর গুরুত্বারোপ করেন।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। তিনি বলেন, সামাজিক নিরাপত্তা খাতে জিডিপির ৩ শতাংশ রাখার কথা সরকার বলছে। কিন্তু সামাজিক নিরাপত্তার মধ্যে পেনশনসহ আরও অনেক বিষয় রয়েছে সেগুলো সরাসরি দরিদ্র মানুষের সাথে সম্পর্কিত নয়। এসব বাদ দিলে প্রকৃত সামাজিক নিরাপত্তায় বরাদ্দ দাঁড়ায় জিডিপির দেড় শতাংশ, যা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে গড়ে ৪ শতাংশ। ফলে এ খাতে বরাদ্দ বাড়ানো দরকার। সার্বজনীন সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা থাকা দরকার। এটা থাকলে নতুন করে যারা দরিদ্র তাদের সুরক্ষা দেওয়া সহজ হত। এজন্য এ খাতে কমপক্ষে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ করা উচিত।

ফাহমিদা খাতুন আরও বলেন, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনার কারণে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ বাড়িয়ে লাভ নেই। এগুলো আগে বন্ধ করতে হবে। মধ্য মেয়াদে সংস্কার কর্মসূচি নিতে হবে। নতুবা বরাদ্দ করা অর্থের অপচয় হবে, দিনের শেষে মানুষের উপকার হবে না। সামাজিক সুরক্ষা গ্রামকেন্দ্রিক। এ অবস্থা থেকে বের হতে হবে। শহরের লোকদের তালিকা নেই। কিন্তু তাদের তালিকা করার ব্যবস্থা নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মধ্য মেয়াদি সংস্কার ও প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়ানোর জায়গা ছিল, বাজেট বাড়ানোর সঙ্গে সেখানে সমানভাবে হাত দেওয়া হয়নি। সরকারি ব্যয় (রাজস্ব ও উন্নয়ন) জিডিপির ১৭ থেকে ১৮ শতাংশ। পাকিস্তান, ভারত, ভুটানসহ দক্ষিণ এশিয়ার অন্য দেশগুলোর তুলনায় কম। বাস্তবায়ন সক্ষমতা অর্জনের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। করোনার মত সংকট যখন আসে, তখন প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয় না। প্রয়োজনীয় ব্যয় করার সক্ষমতা অর্জন করতে হবে। দরিদ্রদের (শহর ও শহরতলীসহ) হালনাগাদ তালিকা জরুরি।

সভায় সংস্থাটির গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম বক্তব্য দেন।

 

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580