১৮৮ রানে ৯ উইকেট হারানোর পরও বাংলাদেশের হারানোর জয়ের আশা ফিরে এসেছিল মেহেদী হাসান মিরাজের ব্যাটে। আবু জায়েদ রাহীর সঙ্গে স্ট্রাইক অদল-বদল করার পাশাপাশি রানের গতিও বাড়ান। ৫৯ ও ৬১তম ওভারে রাকিম কর্নওয়ালকে একটি করে চার ও ছয় মেরে ব্যবধান কমাতে থাকেন তিনি। কিন্তু এই কর্নওয়ালের কাছেই উইকেট হারাতে হলো, জোমেল ওয়ারিকানের বলে ফার্স্ট স্লিপে দাঁড়ানো এই ফিল্ডারের ক্যাচ হন মিরাজ। তাতেই ১৭ রানে জিতে বাংলাদেশকে ২-০ তে হোয়াইটওয়াশ করলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ৫৬ বলে ৩ চার ও ২ ছয়ে ৩১ রান করেন মিরাজ।
বাংলাদেশকে ২১৩ রানে অলআউট করতে কর্নওয়াল সর্বোচ্চ ৪ উইকেট নেন। ওয়ারিকান ও ক্রেইগ ব্র্যাথওয়েট পান তিনটি করে উইকেট।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ- দ্বিতীয় ইনিংস: ৫২.৫ ওভারে ১১৭, লিড ২৩০
বাংলাদেশ- প্রথম ইনিংস: ৯৬.৫ ওভারে ২৯৬ (তাইজুল ১৩*)
নাঈম কী করলেন?
ব্র্যাথওয়েটের স্টাম্পের ওপর সোজা বল। নাঈম বল লিভ করলেন। প্যাডে আঘাত করতেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের উল্লাস। আম্পায়ার আঙুল তুললেন। আরও একটি উইকেট অতিথিদের। নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে নাঈম ফিরলেন ১৪ রানে। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ১৮৮। জয়ের জন্য এখনও ৩৯ রান করতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাই ১ উইকেট।
সোজা বল মিস করে আউট তাইজুল
কর্নওয়ালের আরেকটি উইকেট। এবার তার শিকার তাইজুল ইসলাম। ডানহাতি স্পিনারের সোজা বল মিস করে এলবিডব্লিউ বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। ২৫ বলে ৮ রান করে তাইজুল ফিরেছেন সাজঘরে। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ১৬৩। জয়ের জন্য এখনও ৬৮ রান করতে হবে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের চাই ২ উইকেট।
কর্নওয়াল ম্যাজিক
লিটনের আউটে ঢাকা টেস্টে হারের শঙ্কা। সপ্তম ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটন ফিরলেন সাজঘরে। রাকিম কর্নওয়ালের অফস্টাম্পের বাইরের বল কাট করতে গিয়ে টাইমিংয়ে গড়বড় করেন লিটন। ব্যাটের নিচের অংশে লেগে বল যায় জশুয়া ডি সিলভার গ্লাভসে। ৩৫ বলে ২২ রান করে ফেরেন ডানহাতি ব্যাটসম্যান। লিটন আউট হওয়ার সময় বাংলাদেশের রান ৭ উইকেটে ১৫৩। জয়ের জন্য এখনও ৭৮ রান করতে হবে।
ষষ্ঠ উইকেট হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ
ওয়ারিক্যানের টার্ন ও বাউন্স ডেলিভারীতে ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়ে লেগ গালিতে ক্যাচ দিলেন মুমিনুল হক। কর্নওয়াল নিলেন ইনিংসের দ্বিতীয় ক্যাচ। শেষ বাংলাদেশের অধিনায়কের লড়াই। ৬৮ বলে ৩ বাউন্ডারিতে ২৬ রান করেন তিনি। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৬ উইকেটে ১৪৭। জয়ের জন্য এখনও ৮৭ রান করতে হবে বাংলাদেশকে।
কর্নওয়ালের প্রতিশোধ
ডানহাতি স্পিনার কর্নওয়ালকে এগিয়ে ডিপ মিড উইকেট দিয়ে ছক্কায় উড়িয়েছিলেন মোহাম্মদ মিথুন। এক ওভার পর তাকে ফিরিয়ে প্রতিশোধ নিলেন কর্নওয়াল। প্রথম ইনিংসেও তার বলে আউট হয়েছিলেন মিথুন। ১২ বলে ১০ রান করে ফিরেছেন তিনি। বল মিডল স্টাপে পড়ে শার্প টার্ন পায়। সঙ্গে ছিল হালকা বাউন্স। মিথুনের গ্লাভসে লেগে বল যায় লেগ স্লিপে। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৫ উইকেটে ১১৫।
আউট হয়ে রিভিউ নষ্ট করলেন মুশফিক
জোমেল ওয়ারিক্যানের বাক খাওয়া বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করতে গিয়েছিলেন মুশফিকুর রহিম। বল তার ব্যাটে চুমু খেয়ে যায় জশুয়া ডি সিলভার গ্লাভসে। আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ মুশফিককে আউট দেন। মুশফিক সঙ্গে সঙ্গে রিভিউ চান। তাকে বেশ আত্মবিশ্বাসী মনে হচ্ছিল। কিন্তু ফল হলো উল্টো। মুশফিকের ভাগ্য ফেরেনি। রিপ্লেতে স্পষ্ট দেখা যায় বল মুশফিকের ব্যাট ছুঁয়ে উইকেটের পেছনে যায়। তার আউটে একটি রিভিউ নষ্ট করেছে বাংলাদেশ। ৩০ বলে ১৪ রান করে ফেরেন মুশফিক। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৪ উইকেটে ১০১।
পারলেন না শান্তও
চা-বিরতিতে যাওয়ার আগে শেষ ওভার। এরপর ২০ মিনিটের বিরতি। অথচ নাজমুল হোসেন শান্ত পথ ভুললেন এ সময়ে। রাকিম কর্নওয়ালের বলে শর্ট লেগে ক্যাচ দিলেন শেষ ওভারে! একেবারেই বাজে শট। মনেই হচ্ছিল শটটা নিজের ইচ্ছের বাইরে গিয়ে খেলেছেন। ৩১ বলে ১১ রান করে ফেরেন এ বাঁহাতি। তার আউটের সময় বাংলাদেশের রান ৩ উইকেটে ৭৮। জিততে হলে আরও ১৫৩ রান করতে হবে।
দায়িত্ব এড়ালেন!
৪৪ বলে ফিফটি। প্রয়োজন ছিল নাকি ছিল না সেই ইস্যু নিয়ে অনেক আলোচনা হতে পারে। কিন্তু দলের সেরা খেলোয়াড়কে দায়িত্ব নিতে হয়। দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে যেতে হয়। ২৩১ রানের লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নেমে তামিম হুড়মুড় করে রান তুলেছেন। ৪৪ বলে ক্যারিয়ারের ২৮তম টেস্ট ফিফটি পেতে মেরেছেন ৯ বাউন্ডারি। এরপর সাজঘরে ফিরে আসলেন। চট্টগ্রাম টেস্ট হেরে দল বিপদে। এ ম্যাচ হারলে সিরিজ হার। সেখানে হাতের নাগালে থাকা লক্ষ্যের পথে তামিম ছুটলেন আগ্রাসী মনোভাবে। রান পেয়েছেন। দলের স্কোরবোর্ডও সমৃদ্ধ হয়েছে। কিন্তু ফিনিশ করতে পারলেন না। ব্র্যাথওয়েটের বলে আলগা শটে তার ইনিংস থামে ৫০ রানে। তার বিদায়ের সময় বাংলাদেশের রান ২ উইকেটেস ৭০। নতুন ব্যাটসম্যান মুমিনুল হক।
ব্র্যাথওয়েট ফেরালেন স্বস্তি
২৩১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় উদ্বোধনী জুটিতে ৫৯ রান তুলে দারুণ জবাব দেয় বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক ব্র্যাথওয়েট নিয়মিত সব বোলারদের বোলিংয়ে এনে সাফল্য পাচ্ছিলেন না। বাধ্য হয়ে নিজেই বোলিংয়ে আসলেন। তাতে কাজও হলো। ওভারের প্রথম বলে পেলেন সৌম্যর উইকেট। বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ব্র্যাথওয়েটের বল কাট করতে গিয়ে প্রথম স্লিপে তালুবন্দি হন। কিপার জশুয়া ডি সিলভার গ্লাভসে লেগে বল স্লিপের কাছাকাছি যায়। কর্নওয়াল ডাইভ দিয়ে ক্যাচ লুফে নেন। ৩৪ বলে ১৩ রান করেন সৌম্য। তার বিদায়ের সময় বাংলাদেশের রান ১ উইকেটে ৫৯।
১৩ ইনিংস পর উদ্বোধনী জুটিতে ৫০
ওয়ারিক্যানের বল আলতো টোকায় ফাইন লেগ দিয়ে বাউন্ডারিতে পাঠালেন তামিম ইকবাল। ৪৬ থেকে দলের রান পৌঁছে গেল ৫০ রানে। কোনো উইকেট না হারিয়ে বাংলাদেশ উদ্বোধনী জুটিতে পেল ৫০ রান। ১৩ ইনিংস পর ঘটল এমন ঘটনা। এর আগে ২০১৯ সালের মার্চে ওয়েলিংটনে তামিম ও সাদমানের জুটি ছিল ৭৫ রানের। মাঝে ১৩ ইনিংসে উদ্বোধনী জুটিতে সর্বোচ্চ রান ছিল ৩৯।
১০ ওভারে ৪৫ রান!
লক্ষ্য তাড়ায় সতর্ক হলেও দ্রুত রান তুলছেন দুই বাঁহাতি ওপেনার তামিম ও সৌম্য। রান রেট ৪.৫। এ সময়ে বাউন্ডারি এসেছে ৬টি। ৫টি-ই মেরেছেন তামিম। জুটির ৫০ রান এসেছে ৬৩ বলে। উইকেটে অসমান বাউন্স নেই। বল ব্যাটে আসছে সহজে। সেগুলো দারুণভাবে খেলছেন তামিম ও সৌম্য।
দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান ওয়েস্ট ইন্ডিজের
১১৭ রানে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আটকে দিল বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিপক্ষে এটি তাদের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রান। ২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অলআউট হয়েছিল ১১১ রানে। সেবার দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ হয়ে ইনিংস ব্যবধানে হেরেছিল অতিথিরা। এবার তৃতীয় ইনিংসে ব্যর্থ হলো ক্যারিবিয়ানরা। ১১৩ রানের লিডসহ অতিথিরা বাংলাদেশকে ২৩১ রানের লক্ষ্য দিয়েছে। জিততে পারবে কী বাংলাদেশ?
‘লেজ কাটলেন’ নাঈম
ক্যারিবিয়ান শিবিরের শেষ ২ উইকেট নিলেন স্পিনার নাঈম হাসান। এনক্রোমার বোনার তার বলে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হন ৩৮ রানে। ওই ওভারের পঞ্চম বলে রাকিম কর্নওয়াল তাকে উড়াতে গিয়ে মিড উইকেটে ক্যাচ দেন। শেষ ২ উইকেট নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটিং অর্ডারের লেজ কাটলেন ডানহাতি স্পিনার।
ঘূর্ণিতে তাইজুল দেখাচ্ছেন কারিশমা
মধ্যাহ্ন বিরতির পর তাইজুলের ঘূর্ণিতে কাঁপছে অতিথিরা। প্রথমে জশুয়া ডি সিলভা ও পরে আলজারি জোসেফকে সাজঘরের পথ দেখান এ বাঁহাতি স্পিনার। জশুয়া তার অফস্টাম্পের বাইরের বল খোঁচা মেরে স্লিপে ক্যাচ দেন। জোসেফ ক্যাচ দেন কভারে। শর্ট কভারে তার ড্রাইভ মুমিনুলের কাঁধে লেগে শান্ত হাতে জমা হয়। তাইজুলের জোড়া আঘাতে বিরতির পর ব্যাকফুটে অতিথিরা।
৫৭ রান, ৩ উইকেট
রাহীর ২ ও তাইজুলের ১ উইকেটে প্রথম সেশন বাংলাদেশের। ৩ উইকেট নিয়ে বাংলাদেশ বেশ ভালোভাবেই লড়াইয়ে ফিরেছে। তবে বোলিংয়ে আরও ধার বাড়াতে হবে। কারণ লিড এরই মধ্যে দুইশ অতিক্রম করেছে। মধ্যাহ্ন বিরতিতে অতিথি দলের লিড ২১১ রান। এ সেশনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তুলেছে ৫৭ রান।
ব্ল্যাকউডকে ফেরালেন তাইজুল
লং অফ দিয়ে দারুণ ছক্কায় রানের খাতা খুলেছিলেন জার্মেইন ব্ল্যাকউড। দ্রুত রান তুলতে হবে এমন মানসিকতায় মাঠে নেমেছিলেন। তাতে হিতে বিপরীত হল। তাইজুলের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে বল মিস করে স্টাম্পড হন ৯ রান করা ব্ল্যাকউড।উইকেটের পেছনে দারুণ দক্ষতা দেখান লিটন। তার আউটের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৬ উইকেটে ৭৩। নতুন ব্যাটসম্যান জশুয়া ডি সিলভা।
মায়ার্সকে ফেরালেন রাহী
নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে রাহী পেলেন আরেকটি উইকেট। ভয়ংকর হয়ে উঠার আগে সাজঘরে ফেরত পাঠালেন কাইল মায়ার্সকে। তার লেন্থ বল সোজা ব্যাটে খেলতে চেয়েছিলেন চট্টগ্রাম টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। বলের লাইনে ব্যাট নিতে পারেননি তিনি। এলবিডব্লিউ হয়ে সাজঘরে ফেরেন ৬ রানে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে রিভিউ নিয়েছিলেন। কিন্তু তাতেও ভাগ্যের পরিবর্তন হয়নি মায়ার্সের। তার আউটের সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৫ উইকেটে ৬২। নতুন ব্যাটসম্যান জার্মেইন ব্ল্যাকউড।
রিভিউ নিতে কিপটেমি!
নাইটওয়াচম্যান ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে হাসিখুশি ছিলেন রাহী। নতুন ব্যাটসম্যান কাইল মায়ার্স। মাঠে নেমে প্রথম বলে বাউন্ডারি। হাসিমাখা মুখটা মুহূর্তেই বিমর্ষ হয়ে গেল। কিন্তু হাল ছাড়লেন না এ পেসার।
পরের চার বলে কোনো রান নিতে পারেননি চট্টগ্রাম টেস্টের ডাবল সেঞ্চুরিয়ান। ওভারের শেষ বলে পেতেও পারতেন উইকেট। তার অফস্টাম্পের বাইরের বল ফরোয়ার্ড ডিফেন্স করেছিলেন মায়ার্স। ব্যাটের চুমু খেয়ে বল যায় লিটনের হাতে।
লিটন ও রাহীর হালকা আবেদনে আম্পায়ার রিচার্ড ইলিংওয়ার্থ সাড়া দেননি। তাদের আবেদনও ছিল না যথেষ্ট আত্মবিশ্বাস, প্রাণ। সতীর্থরা অধিনায়ক মুমিনুলকে মানাতেও পারেননি। ফলে তিন তিনটা রিভিউ থাকলেও মুমিনুল চ্যালেঞ্জ জানালেন না। কেন রিভিউ নিতে এতো কিপটেমি!
রাহীর আঘাত
নাইটওয়াচম্যান জোমেল ওয়ারিক্যানকে ফিরিয়ে দিনের পঞ্চম ওভারে বাংলাদেশকে সাফল্যে ভাসালেন পেসার আবু জায়েদ রাহী। তার সোজা ডেলিভারীতে বল মিস করে এলবিডব্লিউ হন ওয়ারিক্যান। ২২ বলে ২ রান করেন তিনি। ওয়ারিক্যানের ফেরার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ৫০। নতুন ব্যাটসম্যান কাইল মায়ার্স।
উইকেটের খোঁজে বাংলাদেশ
১৫৪ রানের লিড নিয়ে দিনের খেলা শুরু করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। লিড নাগালে রাখতে চায় বাংলাদেশ। এজন্য উইকেট নিতে হবে বোলারদের। প্রথম ৪ ওভারে আগের দিনের দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যানের মনোবলে চিড় ধরাতে পারেননি বোলাররা।