শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০১:০৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার সংবাদ পড়তে এখন থেকে আমাদের নতুন ওয়েবসাইট www.dailyajkersangbad.com ভিজিট করুন। টাংগাইল বন বিভাগের দোখলা সদর বন বীটে সুফল প্রকল্পে হরিলুট আগ্রাবাদ ফরেস্ট কলোনী বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেন মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী ফৌজদারহাট বিট কাম চেক স্টেশন এর নির্মানাধীন অফিসের চলমান কাজ পরিদর্শন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে: শেখ সেলিম সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র চলছে সীমাহীন অনিয়ম এলজিইডির কুমিল্লা জেলা প্রকল্পের পিডি শরীফ হোসেনের অনিয়ম যুবলীগে পদ পেতে উপঢৌকন দিতে হবে না: পরশ নির্বাচন যুদ্ধক্ষেত্র নয়, পেশি শক্তির মানসিকতা পরিহার করতে হবে: সিইসি

২১ বছরে দেশে জলাভূমি কমেছে ১৩ দশমিক ২২ বর্গ কিলোমিটার

নিউজ ডেক্স:
  • প্রকাশিত সময় : সোমবার, ৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২১
  • ৩১১ পাঠক পড়েছে

*পরিবেশকর্মীদের মতে এ চিত্র উদ্বেগজনক

আশীষ কুমার দে : সারা দেশে জলাভূমির আয়তন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে। এর উল্লেখযোগ্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যা, অপরিকল্পিত ও অদূরদর্শী উন্নয়ন কার্যক্রম, প্রাকৃতিক পরিবেশ সম্পর্কে সচেতনতার অভাব এবং ভূমিদস্যুর আগ্রাসন। জলাভূমি কমে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে উঠেছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞ, পরিবেশকর্মী ও প্রকৃতিপ্রেমীরা। কারণ, নদীমাতৃক ও কৃষিপ্রধান বাংলাদেশে পর্যাপ্ত জলাভূমির যেমন আবশ্যকতা রয়েছে, তেমনি সবুজ বৃক্ষরাজিসহ প্রাকৃতিক বনাঞ্চল ও প্রাণ-বৈচিত্র্য রক্ষায় জলাভূমির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ সেন্টার ফর এ্যাডভান্সড স্টাডিজের (বিসিএএস) এক সমীক্ষায় বলা হয়েছে, রাজধানীসহ ঢাকা জেলা ও এর আশেপাশে জলাভূমি, নিম্নাঞ্চল ও কৃষিজমি মিলিয়ে মোট ৯০ শতাংশ ইতোমধ্যে ভরাট হয়েছে। এতে প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যসহ জলাভূমির ওপর নির্ভরশীল সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা এবং কৃষিকাজ মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। শুধু ঢাকা কিংবা এর আশেপাশেই নয়; সারা দেশেই ছোট-বড় শহরের চারপাশের জলাভূমি ও নিম্নাঞ্চল ক্রমেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এমনকি গ্রামীণ জনপদেও জলাভূমি ভরাটের ছোঁয়া লেগেছে। জনসংখ্যার আধিক্যের কারণে প্রত্যন্ত টল্লীতে জলাশয় ভরাট করে তৈরি হচ্ছে বসতি। আবার কোথাও খাল-বিলসহ প্রাকৃতিক জলাভূমি ভরাট করে আবাদি জমি তৈরি করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ইন্সটিটিউট অব প্লানার্সের এক গবেষণায় বলা হয়েছে, বহুমাত্রিক দূষণ এবং ক্রমবর্ধমান অপরিকল্পিত নগরায়নের প্রভাবে ঢাকার নিচুজমি ও প্রাকৃতিক খালগুলো ছাড়াও চার পাশের নদী-খাল ও নালা হারিয়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এতে নিকটভবিষ্যতে ঢাকাবাসীর স্বাভাবিক জীবনযাত্রা দুর্বিষহ হয়ে উঠবে। এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, অপরিকল্পিত নগরায়নের প্রভাবে ঢাকায় ভয়াবহ হারে জলাভূমি কমেছে। ১৯৯৯ সালে ঢাকায় জলাভূমির আয়তন ছিল ১৯ দশমিক ৯ বর্গ কিলোমিটার; যা ওই সময়ের মোট ভূমির ১৪ দশমিক ২৫ শতাংশ। ২০২০ সালে এসে এর পরিমাণ কমে দাঁড়িয়েছে ৫ দশমিক ৮৭ বর্গ কিলোমিটারে; যার শতকরা হার ৪ দশমিক ৮৩ শতাংশ। ২১ বছরে জলাভূমি কমেছে ১৩ দশমিক ২২ বর্গ কিলোমিটার; শতকরা হিসাবে জলাভূমি কমেছে ৬৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) তথ্য মতে, সারা দেশে প্রতিবছর ৪৬ হাজার একর কৃষিজমি ও জলাভূমি ভরাট হচ্ছে। নানা ধরনের অপতৎপরতার ফলে দেশের জলাভূমির পরিমাণ এখন নাজুক অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের ভাষ্যমতে, জনসংখ্যার উর্ধ্বগতির কারণে উন্নয়নের নামে অপরিকল্পিত নগরায়ন, শিল্পায়ন ও আবাসন প্রকল্পসহ বাণিজ্যিক উদ্দেশে বহুতল ভবন নির্মাণ, অদূরদর্শী পরিকল্পনামাফিক সড়ক, সেতু, কালভার্ট ইত্যাদি অবকাঠামো নির্মাণ, পরিবেশবিনাশী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণ করে নদী ও খালের পানিপ্রবাহ বাধাগ্রস্থ করা এবং অধিক ফসল উৎপাদনের আশায় জলাভূমিকে আবাদি জমিতে রূপান্তর করার কারণে জলাভূমির আয়তন উদ্বেগজনকহারে কমে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, শহর তো দূরের কথা; গ্রামীন জনপদেও পুকুর ভরাট করে বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে, শিল্পবর্জ্যের ভারে নদী, জলাশয় পরিণত হচ্ছে ময়লার ভাগাড়ে। এভাবে গত তিন দশকে দেশে প্রায় ৮৬ লাখ হেক্টর জলাভূমি বিলুপ্ত হয়ে গেছে। জানতে চাইলে পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক বেসরকারি সংগঠন উন্নয়ন ধারা ট্রাস্টের সদস্যসচিব আমিনুর রসুল বাবুল বলেন, দেশে জলাভূমি ব্যবস্থাপনায় সমন্বিত নীতিমালার অভাব রয়েছে। সরকারের চারটি মন্ত্রণালয় জলাভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ভূমিকা পালন করলেও তাদের নিজেদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব পরিলক্ষিত হয়। জলাভূমির আয়তন মারাত্মকভাবে হ্রাস পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করে আমিনুর রসুল বাবুল বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা তৎপর না হলে রাজধানী ও এর আশেপাশের মানুষই শুধু নয়, সারা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রাই দুর্বিসহ হয়ে উঠবে। বাপার যুগ্ম সম্পাদক মিহির বিশ্বাস বলেন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে জলাভূমির বিস্তর প্রভাব রয়েছে। দেশে জলাভূমি সংরক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে। কিন্তু এর সঠিক প্রয়োগের অভাবে প্রতিনিয়তই জলাভূমি ভরাট করে বাণিজ্যিক ও আবাসিক ভবন তৈরি হতে দেখা যাচ্ছে। উলেস্নখ্য, জাতিসংঘের উদ্যোগে ১৯৭১ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ইরানের রামসার শহরে পরিবেশবিষয়ক একটি আন্তর্জাতিক কনভেনশন হয়। সেখানে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিরা নিজ নিজ দেশে জলাভূমি সংরক্ষণ এবং প্রতিবছর ২ ফেব্রুয়ারি বিশ্ব জলাভূমি দিবস পালনে একমত হন। এর ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে প্রতিবছর দিবসটি পালন হয়ে আসছে। তবে জলাভূমি সংরক্ষণে কার্যকর উদ্যোগ পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580