বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ০৯:৫৩ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার সংবাদ পড়তে এখন থেকে আমাদের নতুন ওয়েবসাইট www.dailyajkersangbad.com ভিজিট করুন। টাংগাইল বন বিভাগের দোখলা সদর বন বীটে সুফল প্রকল্পে হরিলুট আগ্রাবাদ ফরেস্ট কলোনী বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেন মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী ফৌজদারহাট বিট কাম চেক স্টেশন এর নির্মানাধীন অফিসের চলমান কাজ পরিদর্শন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে: শেখ সেলিম সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র চলছে সীমাহীন অনিয়ম এলজিইডির কুমিল্লা জেলা প্রকল্পের পিডি শরীফ হোসেনের অনিয়ম যুবলীগে পদ পেতে উপঢৌকন দিতে হবে না: পরশ নির্বাচন যুদ্ধক্ষেত্র নয়, পেশি শক্তির মানসিকতা পরিহার করতে হবে: সিইসি

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগে চলছে হরিলুট

কক্সবাজার থেকে ফিরে বিশেষ প্রতিনিধি:
  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ২৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২২
  • ৬৮৩ পাঠক পড়েছে

টেকনাফ-উখিয়ায় লাইসেন্সবিহীন শতাধিক স’মিলে দিবারাত্রি চেরাই হচ্ছে কোটি কোটি টাকার চোরাই কাঠ

কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের আওতাধীন উখিয়া ও টেকনাফে শতাধিক লাইসেন্সবিহীন স’মিলি দিবারাত্রি কোটি কোটি টাকার চোরাই কাঠ চেরাই হলেও দেখার কেউ নেই। যে ভাবে পাহাড় ও বনের গাছ কাটা হচ্ছে তাতে অচিরেই এতদঞ্চলে বৃক্ষশূন্য হয়ে পড়বে বলে আশংকা করছেন পরিবেশ বিদগন। সংশ্লিষ্ট বিভাগকে প্রতিটি স’মিল থেকে মাসিক ৮০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা মাসোয়ারা দিয়ে এই অপকর্মটি দীর্ঘদিন ধরে চলে আসছে।

বন নীতিমালা অনুযায়ী বনাঞ্চলের ১০ কিলোমিটার সীমানার মধ্যে করাত কল (স’মিল) করার নিষেধাজ্ঞা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। নেই পরিবেশের ছাড়পত্র। বন বিভাগের কোন অনুমোদন। তারপরেও থেমে নেই দিবারাত্রি চোরাই কাঠ চেরাই প্রক্রিয়া। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র মতে, এগুলো দেখভালের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট বন বিভাগের। কিন্তু তারা অজ্ঞাত কারণে বিষয়টি ওভারলুক করে থাকেন। জানা যায় এতদ্বঞ্চলের শতাধিক স’মিল থেকে প্রতিমাসেই কোটি টাকার উপরে ঘুষ আদায় হয়। যা সংশ্লিষ্ট বিটের গার্ড থেকে শুরু করে ডিএফও পর্যন্ত পৌঁছায়। যে কারণে তারা বিষয়টি দেখেও না দেখার ভান করে আসছেন। এছাড়া পাহাড় দখলদাররা নিজের পৈত্রিক সম্পত্তি মনে করে এই বনবিভাগের হাজার হাজার একর পাহাড় সমতল ভুমিতে পরিণত করছে।

সরেজমিনে গিয়ে কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগে এমন চিত্র দেখা গেছে। জানা যায়,পাহাড় দখলদারদের তালিকায় ইয়াবা কারবারি নারীর নামও রয়েছে। সেখানে সবুজ প্রাকৃতিক বিভিন্ন মুল্যবান গাছপালা এবং পাহাড় কেটে চাষের জমি করেছে।এভাবে পাহাড় কাটা, বনভূমি দখল করা পরিবেশের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে বলে পরিবেশ প্রেমিরা মনে করেন।এভাবে পাহাড় এবং বনের গাছ কাটলে খুব অচিরেই কক্সবাজারের বনভুমি ধ্বংস হবে বলে সচেতন মহলের ধারণা।

কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের পাহাড় দখলের লীলাখেলায় মেতেছে ভূমিদস্যু চক্র। কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের উখিয়া- টেকনাফে বনবিভাগকে মাসোহারা দিয়ে চলছে শতাধিক অবৈধ স’মিল। এসব টাকা বন কর্মচারী থেকে শুরু করে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার পকেটেও যাচ্ছে বলে জানা গেছে। এতে চিরাই হচ্ছে শত শত একর সামাজিক বনায়নের গাছ।এর মধ্যে উখিয়া রাজাপালংয়ের মাছকারিয়া ও ফলিয়া পাড়া এলাকায় রয়েছে বেশ কয়েকটি অবৈধ স’মিল। কয়েকজন গ্রামবাসীর ভাষ্য মতে, ওই এলাকায় উচ্ছেদ অভিযান হয়নি।বনবিভাগের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহযোগিতায় স্থাপিত স’মিলে চোরাই গাছ চিরাই ও পাচারের ডিপুতে পরিণত হয়েছে এগুলো। এসব চিরাইকরা কাঠ ডাম্পার ও জীপ যোগে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সরবরাহ করা হয়। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, সমিল উচ্ছেদ অভিযান চলমান রয়েছে।

সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গেছে, উখিয়া উপজেলার রাজাপালং, রত্না পালং, হলদিয়া পালং ও পালংখালীতে অবৈধ অর্ধ শতাধিক স’মিল বসানো হয়েছে।টেকনাফ উপজেলার সদর, হ্নীলাসহ বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আরও অর্ধ শতাধিক অবৈধ স’মিল। এসব স’মিলে গিলে খাচ্ছে পাহাড়ের হাজার হাজার মূল্যবান গাছ। এবং মাসে লাখ লাখ টাকা যাচ্ছে ডিএফও’র পকেটে। এসব টাকা বিট অফিসার ও রেঞ্জ অফিসারের মাধ্যমে যায় ডিএফও’র হাতে।সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এ সব স’মিলের বৈধ কাগজপত্র কিংবা কোন প্রকার লাইসেন্স নেই। ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে সিন্ডিকেট গঠন করে সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে এসব স’মিল বসানো হয়েছে এবং চলে আসছে।

তবে জানা গেছে, কক্সবাজার দক্ষিণ বনবিভাগের আওতাধীন উখিয়া, টেকনাফ বনবিভাগের সংশ্লিষ্ট এলাকার রেঞ্জ, বিট অফিসার ও বনকর্মী প্রতিটি স’মিল থেকে মাসিক মাসোহারা আদায় করে থাকেন। এদিকে সামাজিক বনায়ন রক্ষায় স্থানীয় নাগরিক সমাজ অবৈধ সমিল উচ্ছেদে অভিযান পরিচালনা করার জন্য বারবার রেঞ্জ ও বিট কর্মকর্তারদের নিকট শরণাপন্ন হলেও তিনি কোন উদ্যোগ বা পদক্ষেপ নিচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ব্যাপারে দু’একজন রেঞ্জ কর্মকর্তা, বন বিভাগের কর্মচারীদের সাথে মাসিক চুক্তি থাকার বিষয়টি অস্বীকার করে, কোট বাজারসহ আরও কিছু জায়গায় অভিযান চালিয়ে স,মিল উচ্ছেদ করা হয়েছে। তারা বন বিভাগে লোকবল সংকটের অজুহাত দেখিয়ে বলেন অনেক সময় ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও প্রশাসন এবং নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সমন্বয় না থাকার ফলে অভিযান করা সম্ভব হয় না। কক্সবাজার দক্ষিণ বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা সারওয়ার আলম জানান, স’মিল উচ্ছেদের বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580