বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ০৮:৪৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
দৈনিক আজকের সংবাদ পত্রিকার সংবাদ পড়তে এখন থেকে আমাদের নতুন ওয়েবসাইট www.dailyajkersangbad.com ভিজিট করুন। টাংগাইল বন বিভাগের দোখলা সদর বন বীটে সুফল প্রকল্পে হরিলুট আগ্রাবাদ ফরেস্ট কলোনী বালিকা বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি হলেন মোজাম্মেল হক শাহ চৌধুরী ফৌজদারহাট বিট কাম চেক স্টেশন এর নির্মানাধীন অফিসের চলমান কাজ পরিদর্শন নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করায় দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়েছে: প্রধানমন্ত্রী আওয়ামী লীগ ২০৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে: শেখ সেলিম সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল ইকোট্যুরিজম কেন্দ্র চলছে সীমাহীন অনিয়ম এলজিইডির কুমিল্লা জেলা প্রকল্পের পিডি শরীফ হোসেনের অনিয়ম যুবলীগে পদ পেতে উপঢৌকন দিতে হবে না: পরশ নির্বাচন যুদ্ধক্ষেত্র নয়, পেশি শক্তির মানসিকতা পরিহার করতে হবে: সিইসি

মরদেহ আটকে টাকা আদায় : তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত সময় : রবিবার, ২০ জুন, ২০২১
  • ২২৯ পাঠক পড়েছে

রোগীর মরদেহ আটকে ভয়-ভীতি দেখিয়ে টাকা আদায়ের অভিযোগে রাজধানীতে তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। এই তিন চিকিৎসক হলেন-ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতাল কাকরাইলের কনসালট্যান্ট ল্যাপারোস্কপিক সার্জন প্রফেসর ডা. আবদুল ওহাব খান, ল্যাবএইড হাসপাতালের গ্যাস্ট্রোএন্টারোলজিস্ট ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল ও বিআরবি হাসপাতালের হেপাটোবিলিয়ারি সার্জন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলী।

রোববার ঢাকা মহানগর হাকিম রাজেশ চৌধুরীর আদালতে এ মামলা করেন মৃত ডা. তৌফিক এনামের বাবা আক্তারুজ্জামান মিয়া। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে সিআইডিকে করে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন।

ডা. তৌফিক ছিলেন রাজধানীর এভার কেয়ার হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার। বাদীর আইনজীবী হেমায়েত উদ্দিন খান হিরোন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ৪ মে ডা. তৌফিক এনাম অসুস্থ হলে তার বাবা আখতারুজ্জামান মিয়া তাকে ডা. আবদুল ওহাব খানের কাছে নিয়ে যান। এরপর জরুরি ভিত্তিতে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হাসপাতালে আবদুল ওহাব তার অধীনে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করেন। এসময় পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে তিনি জানান, রোগীর গলব্লাডারে পাথর হয়েছে, জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। অপারেশন না করলে মারাত্মক ক্ষতি হবে বলে জানান তিনি। এরপর বাদী কোনো উপায়ন্তর না দেখে তার কথা বিশ্বাস করে অপারেশনের জন্য টাকা দেন।

কিন্তু গত ৫ মে ডা. আবদুল ওহাব খান অপারেশন করে পরদিন ৬ মে রোগীকে ছাড়পত্র দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেন। এরপর গত ৯ মে সন্ধ্যার পর রোগী গুরুতর অসুস্থ হলে ডা. আবদুল ওহাবের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তিনি রোগীকে তার কাছে নিয়ে যেতে বলেন। আবার পরীক্ষা-নিরীক্ষার নির্দেশ দিলে সে অনুযায়ী পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হয়। রিপোর্ট দেখে তিনি বলেন, ‘রোগীর অপারেশনের স্থানে কোনো জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে কি-না এজন্য এমআরসিপি পরীক্ষা করতে হবে।’ এরপর জরুরি ভিত্তিতে ১১ মে পরীক্ষা করে কাগজপত্র নিয়ে গেলে আবদুল ওহাব বলেন, ‘অপারেশনের পর রোগীর কমন বিলেডাক্ট (common bileduct) চিকন হয়ে গেছে এবং অপারেশনের সময় একটি সমস্যা হয়েছে। রোগীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের কাছে নিয়ে যেতে হবে। সেখানে ছাড়া দেশের অন্য কোথাও এর চিকিৎসা করলে ভালো হবে না।’

এরপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করে ডা. আবদুল ওহাব রোগীকে ল্যাবএইড হাসপাতালে পাঠান। সেখানে ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীল রোগীর কতগুলো পরীক্ষা করেন। পরীক্ষা শেষে রোগীর ERCP with stenting (ইআরসিপি উইথ স্টেনটিং) করার ব্যর্থ চেষ্টা করেন তিনি। যার কারণে রোগীর শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হতে থাকে। এরপর রোগীর প্যানক্রিয়েটিটিস (pancreatitis) বাড়তে থাকে এবং রোগী মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকেন। সেসময় ডা. স্বপ্নীলকে বারবার ডাকলেও পাওয়া যায় না। আসছি, দেখছি ইত্যাদি বলে সময়ক্ষেপণ করতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে তিনি রোগীকে বিআরবি হাসপাতালের হেপাটোবিলিয়ারি সার্জন প্রফেসর ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে নিয়ে যাওয়োর পরামর্শ দেন। আসামিরা পরস্পরের যোগসাজশে রোগীকে জোর করে ডা. মোহাম্মদ আলীর কাছে পাঠান।

এরপর আক্তারুজ্জামান মিয়া তার ছেলেকে সেখানে ভর্তি করেন। সেখানে আডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘রোগীর অবস্থা ভালো না। জরুরি ভিত্তিতে অপারেশন করতে হবে। অন্যথায় রোগীকে বাঁচানো যাবে না। এজন্য অনেক টাকা লাগবে।’ কিন্তু রোগীর পরিবারের সদস্যরা বিআরবি হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে চাননি। বরং তারা পিজি হাসপাতালে বা অন্য কোথাও চিকিৎসা করাতে চেয়েছিলেন। কিন্তু আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে জোর করে এবং ভয়ের পরিস্থিতি সৃষ্টি করে রোগীকে বিআরবি হাসপাতালে রেখে দেন।

এরপর গত ২৭ মে অপারেশনের জন্য প্রথমে দিন ঠিক করেন। কিন্তু ডা. আবদুল ওহাব অপারেশনের নামে অর্থের জন্য কালক্ষেপণ করে ৩০ মে আবার অপারেশনের জন্য তারিখ নির্ধারণ করেন। তখন মামলার বাদী আক্তারুজ্জামান ও সাক্ষীদের সন্দেহ হলে রোগীকে ছাড়পত্র দেয়ার জন্য ডা. মোহাম্মদ আলীকে বারবার অনুরোধ করেন। কিন্তু তিনি কোনো কর্ণপাত করেননি। জোরপূর্বক টাকা আদায়ের জন্য হাসপাতালে রেখে দেন। রোগী মারা যাওয়ার পরও ডা. মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘রোগী ভালো আছে। ভালো হয়ে যাবে।’ এইভাবে টাকা আদায় করেন তারা।

মামলার অভিযোগে আরও বলা হয়, এ ঘটনায় গত ১৫ জুন কলাবাগান থানায় মামলা করতে গেলে গ্রহণ না করে আদালতে মামলা দায়েরের পরামর্শ দেয়া হয়। আসামিরা পেনাল কোডের ৩০৪-ক ও ৩৮৬/৪০৬/৪২০ ধারায় সুনির্দিষ্ট অপরাধ করেছেন। এমতাবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা ন্যায়বিচারের স্বার্থে একান্ত প্রয়োজন।

 

 

নিউজটি শেয়ার করে আমাদের সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
© All rights reserved © 2019-2020 । দৈনিক আজকের সংবাদ
Design and Developed by ThemesBazar.Com
SheraWeb.Com_2580