গ্রামের নাম চকরাম পুর। ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার একটি গ্রাম। আশ্বিন মাস। শরৎ সকাল।তখনো কুয়াশা ভেদ করে সূর্যালোকধরণিতে পতিত হয়নি। গ্রামের অধিকাংশ লোকের তখনো ঘুম ভাংগেনি। মুসল্লিগণ মসজিদে ফজরের নামাজ আদায় শেষে আনমনে যার যার বাড়ী গেলেও কৃষক আবু বকর সিদ্দিক মাঠে জমি দেখার জন্য রওনা হয়। মোনায়েম মেন্বারের বাড়ী পার হওয়ার পরেই রাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে মাঠে যাবার আইলের রাস্তার মুখি হয়ে সামনে তাকাতেই দেখে আকাশি গাছের অনেক উচায় লাশ ঝুলতেছে। গাছের পার্শ্বের ক্ষেতে আফাজ উদ্দিন মাথা নিচু করে কাজ করছিল।
আবু বকর সিদ্দিক লাশ দেখে আফাজ কে গাছের দিকে তাকিয়ে দেখতে বলে“ঐটা কি ঝুলতাছে।” সঙ্গে সঙ্গে আফাজ লাশ দেখে চিৎকার করে দৌড় দিয়া রাস্তায় তার কাছে চলে আসে এবং দুইজনে চিৎকার করতে থাকে। তাদের ডাক চিৎকারে গ্রামের অনেকেই সেখানে আসে। মোনায়েমের বাবা ওআসে। রাস্তা থেকে গাছের কাছাকাছি গিয়া দেখে গাছে মোনায়েমের লাশ ঝুলতেছে।গাছের গোড়ায় মোনায়েমের ব্যবহ্নত র্শাট, মোবাইল ফোন ও স্যান্ডেল সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রাখাছিল।ঝড়ের বেগে সংবাদ চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। মানায়েম মেন্বারের ঝুলন্ত লাশ দেখতে আশেপাশের বিভিন্ন এলাকা হতে হাজার হাজার নারী-পুরুষ আসে। সকলের একটাই প্রশ্ন এত উচা ডালে মানুষ কেমনে ফাঁস নেয়। ২৭ বছরের অবিবাহিত টকবকে ফুটন্ত যুবক সকলের প্রিয় রামপুর ইউপি মেন্বার মোনায়েম খান । সে কেন বাড়ীর পাশে আকাশী গাছের ৩৫ ফুট উচু ডালে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্নহত্যা করবে? কেও বলে আত্নহত্যা কেও বলে হত্যা।অস্বাভাবিক মৃত্যু। আইনের বাধ্যবাকতা থাকায় পুলিশ ছাড়া লাশের ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার কারো নেই।
থানা পুলিশ সংবাদ পায়।মোনায়েম মেম্বারের মৃত্যুর ঘটনায় ত্রিশাল থানার জিডি হয়। সকাল ০৯.৩০ ঘটিকার সময়ত্রিশাল থানার এসআই/লিটন মিয়া ঘটনা স্থলে আসে।সকাল থেকেই সুচতুর হত্যাকারী ও তাদের দোষররাঘটনাকে অন্য খাতে নেওয়ার জন্য আবেগে আপ্লুত হয়ে মেন্বারের অকাল মৃত্যুতে মেন্বারের গুণর্কীতনের পাশা পাশি আত্নহত্যা সুপ্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করছিল এবং আনমনে গুরুকে ডাকছিল। ইবলিশ শয়তান ভক্তদের ডাকে স্থির থাকতে না পেরে স্বয়ং চকরামপুর গ্রামে আস্তানা গাড়ে। ভক্তদের সুরক্ষা দিতে প্রথমেপুলিশকে আকৃষ্ট করে।পুলিশগাছ হতে মৃতদেহ নামায়। শয়তানের কারশাজিতে পুলিশ সঠিক ভাবেমৃতের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতে পারেনা।সঠিক ভাবে মৃতের সুরতহাল প্রস্তুত করলে হত্যা না আত্নহত্যা তা দিবালোকের ন্যায় ফুটে উঠতো।কিন্তু মৃতের বাবা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জোর প্রতিবাদে শয়তান ভক্তদের ষড়যন্ত্র নৎশাদ করে লাশ ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। শয়তান ভক্তদের প্রথম পদক্ষেপ বিফল হওয়ায় তাদের তৎপরতা আরো বেড়ে যায়। এলাকায় প্রপাগান্ডা ছড়ায় যে, “মোনায়েম মেন্বার নির্বাচনের সময় অনেক টাকা ধার করছিল।
সময় মত টাকা দিতে না পারায় লজ্জায় আত্নহত্যা করছে।”মরার দুই দিন আগে সিরাজের দোকানতে রশি কিনছিল। সেই রশি দিয়া গলায় ফাঁস দিছে। অপরাধীরা এখানেই ক্ষান্ত হয় নাই । মোনায়েম মেম্বার আত্নহত্যা করেছে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য থানা পুলিশে ও হসপিটালে জোর তদ্বির চালায়। বাবা জমাত আলী খান বুঝতে পারে,থানার উপর বিশ্বাস করলে তার ছেলে-হত্যার বিচার পাবেনা। রটনাকারীদের মধ্যে তারা মিয়া @তারু,আকরাম হোসেন,শাহীন মিয়া,জাফরুল, লাল মিয়া @লালু,সেলিম সরকার, তাজামুল ইসলাম @বাবুগনকে আসামী করে আদালতে নালিশী মোকাদ্দমা করেন। আদালত নালিশী মোকাদ্দমাটি আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ত্রিশাল থানায় পাঠায়। ওসি সাহেব উক্ত অভিযোগটি অনুসন্ধানের জন্য একই অফিসার এসআই/মোঃ লিটন মিয়া’কে দায়িত্ব প্রদান করেন। তদন্তকারী অফিসার এসআই/লিটন মিয়া কর্তৃক প্রস্তুতকৃত সুরতহাল রিপোর্ট এর উপর ভিত্তি করে ডাক্তার কর্তৃক প্রদত্ত ময়না তদন্ত প্রতিবেদনে ঘটনার সঠিক প্রতিফলন ঘটে নাই।
ময়না তদন্ত রিপোর্টে ডিসিস্টের মৃত্যু সংক্রান্তে ডাক্তারমতামত প্রদান করেন যে, Death in my opinion was due to asphyxia as a result of hanging which was antemortem and suicidal in nature. এস আই লিটন মিয়ামামলা অনুসন্ধান শেষে ২২/০১/১৭ তারিখে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন যে, বাদীর অভিযোগে বর্ণিত আসামী’গণ মৃত মোনায়েম মেম্বার এর নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দী ছিল। নির্বাচন উপলক্ষে মৃত মোনায়েম খান এর বেশ ধার-দেনা হয়। উক্ত ধার দেনা সংক্রান্তে মানষিক চাপের কারনে গত ইং ২৪/০৯/১৬ খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত অনুমান ১১.০০ ঘটিকার সময় কাউকে কিছু না বলে বাড়ী হতে বের হয়ে আসে।পরবর্তীতে রাতের যে কোন সময় সে তাদের বাড়ীর অনুমান ৫০০ গজ পশ্চিমে চলাচলের কাচা রাস্তার পাশে থাকা আকাশী গাছের ডালের সাথে মাটি থেকে অনুমান ৩৫ ফুট উপরে নাইলনের রশি দিয়ে ফাঁসি নিয়ে আত্মহত্যা করেছে। আদালতের কাছে উক্ত প্রতিবেদন গ্রহণযোগ্য না হলে নিয়মিত মামলা রুজু করার নির্দেশ দিলে ত্রিশাল থানায় হত্যা মামলা হয় এবং পুনরায় এসআই/লিটন মিয়ার উক্ত মামলার তদন্তকারী নিযুক্ত হন। তার তদন্তকালে বাদীর আবেদনের প্রেক্ষিতে আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য পিবিআইকে দেয়।এই খানেই বিধি বাম। শয়তান জানে ময়মনসিংহ পিবিআই এর চোখে কোন চশমাই লাগানো যাবেনা।
পিবিআই মামলা তদন্তে এলে শয়তানের আস্তানা ভেঙ্গ চুড়মার করে ফেলবে। এই ভয়ে শয়তান ভক্তদের বাই বাই জানিয়ে আস্তানা গুটিয়ে চলে যায়।মৃতের প্রকৃত কারণ উৎঘাটনের লক্ষে আদালতের নির্দেশে মৃত মোনায়েম মেম্বারের মৃত দেহ কবর হতে পুনরায় উত্তোলন পূর্বক সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করতঃ ময়না তদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে প্রেরণ করা হয়।ঢাকা মেডিকেল কলেজের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন তিন সদস্য বিশিষ্ট কমিটির মাধ্যমে লাশের ময়না তদন্ত সম্পন্ন করেন। সাধারন মানুষের দৃষ্টি অন্য দিকে নেওয়ার লক্ষ্যে উক্ত টিম গত ১৫/০৯/১৭ তারিখে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে সাক্ষ্য প্রমাণ সংগ্রহ করে মতামত প্রদান করেন যে, Considering postmortemexamination findings and chemical analysis report we are of the opinion that no opinion could be ascertained regarding cause of death. কিন্তু বাস্তবে পূর্বের ময়না তদন্ত রিপোটের প্রতিফলন ঘটেছে। ঘটনার পরপরেই ঘটনা স্থলে গেলে ঘটনাস্থলে প্রাপ্ত আলামত, মৃতদেহের অবস্থান, মৃতদেহে প্রাপ্ত জখমবা চিহ্ন দেখে একজন তদন্তকারী অফিসার প্রাথমিক ভাবে বুঝতে পারে এটা হত্যা না আত্ন হত্যা।একটি সঠিক ময়না তদন্ত রিপোট প্রমান করে হত্যা না আত্নহত্যা। কিন্তু এই ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো। দীর্ঘ ৫/৬ মাস পর বিনাআলামত, পুলিশ রিপোট ও ময়নাতদন্ত রিপোটে আত্নহত্যা সুপ্রতিষ্ঠিত সে ক্ষেত্রে শুধু মাত্র অনুমানের উপর ভিত্তি করে মামলা ডিটেক্ট করা অত্যান্ত জটিল ও কঠিন।
পিবিআই মামলা তদন্ত কালে মৃতের বিভিন্ন ছবি, পারিপাশ্বিক অবস্থা ওবিভিন্ন লোকের নিকট প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষন করে যে সকল বিষয় গুরুত্বের সাথে নেয় তা হলো ১। মৃতের বাবা কেন একই গ্রামের সাত জনকে আসামী করে কোর্টে মামলা করে ২।মোনায়েম মেন্বার গাছে উঠতে পারে না সে কি ভাবে সরুআকাশী গাছের ৩৫ ফুট উচু ডালে রশি বেধে গলায় ফাঁস দেয় (আত্ন হত্যার পূর্বে আত্ন হত্যাকারী চরম ভীতিযুক্ত উদ্বেগ ও প্রচন্ড মানুষিক বিভ্রান্তির মধ্য থাকে। এমতবস্থায় এত উপরে গাছে উঠা অসম্ভব )৩। একজন আত্ন হত্যাকারী কি গাছের গোড়ায় তার পরনের জামা,মোবাইল ও স্যান্ডেল সুন্দর ভাবে গুছিয়ে রাখবে? ৪।ফাঁসের রশি ঘাড় থেকে অনুমান ৪”উপরে ঘাড়ের পিছনে থাকবে ? ৫। বুকে,দুই উরু ও দুই পায়ের পাতায় ঘোষা দাগ নাই কেন ?৬।
নির্বাচনে বিপুল পরিমান অর্থ কার নিকট হতে ধারনিয়েছিল ? ৭। সে একজন অবিবাহিত যুবক।ব্যাক্তিগত বা রাজনৈতিক বিরোধ ছিল কি না এই বিষয় গুলি বিবেচনায় নিয়া তথ্য উপাত্ত বিশ্লেষণ করে সম্ভব্য মৃত্যুর গুরুত্বপূর্ণ তিনটি কারণ আবিস্কার করে ১। গত ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে রামপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে বিপুল ভোটে জয়লাভ করা, ২। মোনায়েম চিরাতল বিল পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়া, ৩। একই গ্রামের নয়না(ছদ্ম নাম) নামক একটি মেয়েরসাথে সম্পর্ক । উল্লেখিত ত্রি-মুখিবিদ্বেষের কারণে হত্যা হতে পারে । ২০১৬ সালে ইউপি নির্বাচনে রামপুর ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের সদস্য পদে প্রাক্তন ইউপি সদস্য কাইয়ুম এর সাথে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয়। কাইয়ূম বিপুল ভোটের ব্যাবধানে পরাজিত হয়। ইউপি নির্বাচনে মোনায়েমকে নির্বাচন না করার জন্য বিভিন্ন ভাবে কাইয়ুম মেম্বার প্রভাবিত করার চেষ্টা করেছিল। কাইয়ুম মেম্বার এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তি। সে এবং তার লোকজন প্রতিশোধ নেওয়ার বাসনা থাকতে পারে ২। মোনায়েম চিরাতল বিল পানি ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি হওয়ায় তার প্রতিপক্ষ ছিল আকরাম, সেলিম সরকার ও সিরাজুল ইসলাম ।নেতৃত্ব ও আর্থিক বিষয় সন্তানসম মোনায়েমের নিকট ছেড়েদিতে বাধ্য হওয়ায় তার প্রতি ক্ষুব্দ ছিল ৩। অপরদিকে মোনায়েমের সাথে একই গ্রামের নয়নার বহু পূর্ব হতেই সুসম্পর্ক ছিল। নয়না বিবাহিত মহিলা। তার স্বামী মোনায়েমের বন্ধু মমিন বর্তমানে কুয়েত প্রবাসী।
নয়নার সাথে মৃত মোনায়েম মেম্বারের পরকীয়া সম্পর্ক ছিল বলে জানা যায়। এ কারনে নয়নার বাবা আনছার উদ্দিন ও স্বামী মমিন মোনায়েমের উপর ক্ষুব্দ ছিল। এরই ভিত্তিতে একই গ্রামের জাফরুল, মোস্তাকিম ও সিরাজুলগণকে গ্রেফতার করে ব্যাপক জিজ্ঞাসা করলে তারা ঘটনার আদি-অন্ত প্রকাশ করে। মোনায়েমকে হত্যার ১০/১৫ দিন আগে আনসারের নেতৃত্বে নয়নার শ্বশুরবাড়ী অর্থাৎ মমিনের বাড়ীতে তারা মিয়া, আকরাম, শাহীন, মোস্তাকিম, বাবু, শরীফ, নাইম, নাদিম, জাফরুলগণ মিলিত হয়ে কৌশলে মোনায়েম মেম্বারকে তারা মিয়া@ তারুর বাড়ীতে দাওয়াত দিয়ে ডেকে এনে হত্যার পরিকল্পনা করে এবং সিদ্ধান্ত হয় হত্যার পর আত্মহত্যা বলে প্রচার করবে। আনসারের এই হত্যা পরিকল্পনায় ইউপি নির্বাচনে পরাজিত কাইয়ুম মেম্বার এবং চিরাতল বিলের সভাপতি পদের প্রতিদ্বন্দী সেলিম সরকার সর্বাত্নক সহযোগীতার আশ্বাস প্রদান করেছিল। গত ২৪/০৯/১৬ খ্রিঃ পূর্ব পরিকল্পনানুযায়ী মাগরিবের নামাযের পর একই গ্রামের তারু, জাফরুল, আকরাম, শাহীন ও সেলিমগণ দাওয়াতের নাম করে মোনায়েম মেম্বারকে বাড়ী থেকে ডেকে চকরামপুর নামাপাড়াস্থ তারুর বাড়ীতে নিয়ে যায়। সেখানে রাতে খাওয়া দাওয়ার ব্যবস্থা ছিল। আর এ খাবার আসে পার্শ¦বর্তী নয়নার বাড়ী থেকে। নয়না ও তারু মিলে খাবার খাওয়ায়।
এ সময় মোনায়েমর সাথে বাবু, জাফরুল, নাইম, নাদিম, শরিফ, আকরাম, মোস্তাকিমসহ সবাই একসাথে খাওয়া দাওয়া করে। পরে আনছার এসে তাদের সাথে যোগ দেয়। খাওয়া দাওয়া পরিবেশন করার পর নয়না ঘর থেকে চলে গেলে দরজা বন্ধ করে দেয়। তারা পূর্বেই সুকৌশলে খাবার পানিতে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে মোনায়েমকে খাওয়ায়। কিছুক্ষনের মধ্যে মোনায়েম অচেতন হয়ে পড়ে। মোনায়েমকে সবাই ধরাধরি করে বিছানায় নিয়ে দুই হাত-পা চেপে ধরে এবং গলা টিপে হত্যা করে। মোনায়েমের লাশ ঘর থেকে বের করে মোস্তাকিমের সিএনজিতে উঠায়। তারা আর একটি সিএজি নেয়। সিএনজির পর্দা নামানো ছিল। তারা দুই সিএনজি নিয়ে প্রথমে উত্তরে দিকে গিয়ে মানুষ দেখতে পায় তারপর রামপুর বাজারের দিকে রওনা করে সেখানেও মানুষ দেখতে পেয়ে অবশেষে মোনায়েমদের বাড়ীর সামনের রাস্তা দিয়ে পশ্চিমে অনুমান ৫০০ গজ দূরে গিয়ে সিএনজি হতে লাশ নামায়। আকাশী গাছের গোড়ায় মোনায়েমের শার্ট খুলে তার মোবাইল ফোনটি শার্টের পকেটে ঢুকিয়ে স্যান্ডেলের উপর গুছিয়ে রাখে। মোনায়েমের লুঙ্গিটি লেংটি মেরে (কাছু মেরে) পরানো হয়। মোনায়েমের গলায় দড়ির ফাঁস লাগানো হয়।
তার লাশটি অনুমান ৩৫ ফুট উপরে ঝুলিয়ে দেয়। আসামীরা এমন ভাবে লাশ ঝুলায় যাতে সবাই মনে করে যে, মোনায়েম ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেছে। মোনায়েমের হত্যাকান্ডের দু’দিন আগে আসামী তারা মিয়া @ তারু চকরামপুর বাজারের মনোহরি দোকানদার সিরাজুলের নিকট হতে নাইলনের সাদা চিকন দড়ি ক্রয় করে। তারু যে রকমের দড়ি সিরাজুলেরর দোকান থেকে ক্রয় করেছিল সে রকম দড়ি দিয়েই মোনায়েমের লাশ গাছের ডালে ঝুলানো ছিল। অথচ তারা মিয়া@তারু বিষয়টিকে অন্যখাতে নেওয়ার উদ্দেশেইসিরাজের দোকান থেকে মোনায়েম রশি কিনে নিয়ে আত্মহত্যা করেছে মর্মে প্রচার করতে সিরাজকে বলে। তাদের কথা মতো সিরাজুল তার দোকানে বসে মোনায়েমের হত্যাকান্ডকে আত্মহত্যা বলে প্রচার করতে থাকে। উক্ত ৩ জন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেছিল।মামলা তদন্ত শেষে ১। মোঃ তারা মিয়া @ তারু ২। তাজামুল ইসলাম @ বাবু ৩। শাহীন মিয়া ৪। মোঃ শরিফ ৫। আনছার উদ্দিন ৬। আবু নাঈম ৭। নাদিম ৮। মোস্তাকিম ৯। জাফরুল ১০। আকরাম হোসেন ১১। সেলিম সরকার ১২। কাইয়ুম মেম্বার ১৩। মমিন ১৪। মোঃ সিরাজুল ইসলাম ১৫। মহিউদ্দিনগনের বিরুদ্ধে চার্জসিট দাখিল করা হয়েছে। বিচারে কি হবে এক মাত্র সৃষ্টিকর্তা জানেন। তবে হত্যার তথ্য উন্বোচিত হয়ে হত্যাকারীদের মুখোশ খুলে গিয়েছে। ফলে হত্যাকারীরা আত্নীয়-পরিজন সহ এলাকার লোকজনের কাছে যুগ যুগ ধরে ঘৃনিত খুনি হিসাবে বিবেচিত হবে। লেখক: মোঃ আবু বকর সিদ্দিক পিপিএম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অবঃ)।